প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১৫:২৩
গাজার নিরস্ত্র মুসলমানদের উপর নির্মম হামলা চালিয়ে বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে পড়া ইসরায়েল এবার নিজেই এক ভয়াবহ প্রতিপক্ষের মুখোমুখি। ফিলিস্তিনে গণহত্যার নেপথ্যে থাকা দখলদার রাষ্ট্র এবার পড়েছে ইরানের প্রতিশোধের মুখে। ভুলে গিয়েছিল তারা ইরানের সামরিক সক্ষমতা আর আধুনিক যুদ্ধ প্রযুক্তির বাস্তবতা।
সম্প্রতি ইসরায়েল ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় আগ বাড়িয়ে হামলা চালায়। কিন্তু ফলাফল হয় উল্টো। পাল্টা প্রতিরোধে নেমে ইরান একের পর এক আঘাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো ভূপাতিত করে দেয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হারাতে হয় ২৮টি উন্নত যুদ্ধবিমান, যার মধ্যে ছিল একাধিক এফ-৩৫ এবং একটি গুপ্তচর ড্রোন।
ইরানের সামরিক সূত্র জানায়, ওই ড্রোনটি ছিল যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত আরকিউ-৪ গ্লোবাল হাওক মডেলের, যা ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে নজরদারি চালাচ্ছিল। কিন্তু ইরানের ইলেকট্রনিক যুদ্ধ বিভাগ সফলভাবে তা জ্যাম করে এবং মিসাইল দিয়ে ধ্বংস করে।
এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে ইরানের নিজস্ব নির্মিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘বাভার-৩৭৩’ এবং ‘খোরদাদ-১৫’। বিশেষ করে খোরদাদ-১৫ সিস্টেমটি ১২০ কিলোমিটার দূর থেকে শত্রু বিমান শনাক্ত করতে পারে এবং ৭৫ কিমি পর্যন্ত টার্গেট ধ্বংস করতে সক্ষম। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়েই বেশিরভাগ বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানায় তেহরান।
ইরানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানায়, শত্রুপক্ষের বিমান ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশ করতেই তাদের রাডার সিস্টেম গতিপথ চিহ্নিত করে নেয়। এরপর মাল্টি-লেয়ারড ডিফেন্স নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বিমানগুলোকে লক করে ধ্বংস করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কেবল ইরানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার প্রদর্শনী নয়, বরং এক নতুন ভূ-রাজনৈতিক সংকটের সূচনা। কারণ, সংঘর্ষে জড়ানোর পর বিশ্ব রাজনীতি এখন বিভক্ত দুই ভাগে। চীন, রাশিয়া ও মুসলিম দেশগুলো ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তিগুলো সমর্থন দিচ্ছে ইসরায়েলকে।
পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে শুধু ইরান ও ইসরায়েল নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্য এমনকি বিশ্বজুড়েই বড় ধরনের সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে এই উত্তেজনা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি হয়ে উঠতে পারে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ পর্ব।