বালিয়াডাঙ্গীতে আ.লীগের সিন্ডিকেটের অবসান, ইজারায় রাজস্ব বৃদ্ধি চার গুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ ইলিয়াস আলী - জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: রবিবার ২রা মার্চ ২০২৫ ০৪:৫১ অপরাহ্ন
বালিয়াডাঙ্গীতে আ.লীগের সিন্ডিকেটের অবসান,  ইজারায় রাজস্ব বৃদ্ধি চার গুন

ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী দুও পুকুরের ইজারা মূল্য চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩ একর ২৬ শতক আয়তনের এই সরকারি বদ্ধ জলমহালটির ইজারা মূল্য ১৪৩২-১৪৩৪ বঙ্গাব্দের জন্য ৯,৮০,০০০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ১৪২৯-১৪৩১ বঙ্গাব্দে একই পুকুরটি ২,৪০,৭৫০ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের কারণে ইজারার দাম কম ছিল। তবে এবার সেই সিন্ডিকেট ভেঙে ন্যায়সংগতভাবে নিলাম অনুষ্ঠিত হওয়ায় ইজারা মূল্য অনেক বেড়েছে।


নতুন ইজারা মূল্য বৃদ্ধির ফলে সরকারি রাজস্ব আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রকৃত মৎস্যজীবীদের জন্যও এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জ্যোৎস্না আরা বেগম জানান, “বর্ধিত ইজারা মূল্য জলমহালের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মাছ চাষে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ফল।”


দুও পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের জীবিকার অন্যতম উৎস হিসেবে পরিচিত। ইজারা মূল্য বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তারা আশাবাদী, এতে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে। মৎস্যজীবীরা আশা করছেন যে, এবার সঠিক ব্যবস্থাপনা ও ন্যায়সংগত ইজারার মাধ্যমে মাছ চাষের পরিধি আরও বাড়বে এবং আরও বেশি লোকের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।


বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, নিলাম প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং ইজারাদারদের সরকারি নিয়মকানুন মেনে জলমহাল ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসাইন বলেন, “দুও পুকুরের ইজারা মূল্য বৃদ্ধি সরকারের রাজস্ব আহরণে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এটি স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার প্রমাণ বহন করবে।”


এবার দুও পুকুরের ইজারা পেয়েছে আলোকছিপি সিআইজি সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আমি অনেক খুশি যে সিন্ডিকেট ভেঙে এবার সুন্দর একটি নিলামের মাধ্যমে আমরা ইজারা পেয়েছি। এতে যেমন আমরাও লাভবান হব অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।”


স্থানীয় বাসিন্দা হাসান আলী জানান, “আমাদের এই পুকুরটি মাছ চাষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইজারা মূল্য বৃদ্ধির ফলে মাছ চাষের পরিধি বাড়বে এবং স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।”


দুও পুকুরটি ঐতিহ্যগতভাবে স্থানীয় মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের কাছে একটি পরিচিত নাম। এখানকার মাছ চাষের মাধ্যমে এলাকার বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। ইজারা মূল্য বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় মৎস্য খাতের উন্নয়ন এবং সরকারি রাজস্বের আয় বৃদ্ধি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।