নোয়াখালীতে ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন নির্বাচন অফিসের কর্মচারী

নিজস্ব প্রতিবেদক
গিয়াস উদ্দিন রনি- জেলা প্রতিনিধি , নোয়াখালী
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:২৫ অপরাহ্ন
নোয়াখালীতে ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন নির্বাচন অফিসের কর্মচারী

নোয়াখালী জেলা নির্বাচন অফিসের এক কর্মচারী ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন। জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নওয়াবুল ইসলামের হস্তক্ষেপে এই টাকা ফেরত দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।  


লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন ভেরিফিকেশনসহ বিভিন্ন সেবা নিতে গেলে কিছু কর্মচারী অনৈতিকভাবে টাকা আদায় করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করতে সাংবাদিক ইমাম উদ্দিন আজাদ নিজের এবং বন্ধুর জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন ভেরিফায়েড কপি সংগ্রহের জন্য গেলে হিসাব সহকারী টবলু সূত্রধর তার কাছ থেকে টাকা নেন। পরে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা বিষয়টি জানার পর টাকা ফেরত দেন।  


ঘটনার পর সাংবাদিক আজাদ অফিস থেকে বের হলে উচ্চমান সহকারী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন তাকে অকথ্য ভাষায় ভর্ৎসনা করেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন এ অফিসে কর্মরত থাকায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ঘুষ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।  


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি পৌরসভার হরিনারায়ণপুরে জায়গা কিনে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।  


অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, সাংবাদিকের সঙ্গে তার তর্ক হয়েছিল। তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি চারটি সংশোধনী এবং ভেরিফায়েড কপি আনতে চেয়েছিলেন। পরে অফিসের অন্যান্য কর্মচারী সন্দেহ প্রকাশ করলে টাকা ফেরত দেওয়া হয়।  


এ বিষয়ে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নওয়াবুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অনিয়ম প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে স্থানীয়দের দাবি, শুধু টাকা ফেরত নয়, দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।  


সাধারণ নাগরিকদের অভিযোগ, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনসহ বিভিন্ন সেবায় ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। এ ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে জনগণ সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হতে থাকবে। তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।  


এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী জেলা নির্বাচন অফিসের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। সচেতন মহল দাবি করছে, শুধু টাকা ফেরত নয়, এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে না পারে।