২৪ ঘণ্টায় ৮ জনের আত্মহত্যার চেষ্টা একই উপজেলায়!

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ২রা মার্চ ২০২৫ ১২:৩৩ অপরাহ্ন
২৪ ঘণ্টায় ৮ জনের আত্মহত্যার চেষ্টা একই উপজেলায়!

রাজশাহীর দুর্গাপুরে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত আটজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে দুই নারী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। নিহতরা হলেন, উপজেলার পাইকড়তলী গ্রামের ওয়াশিমের স্ত্রী জান্নাতুন (২৮) এবং তেবিলা গ্রামের রেন্টুর স্ত্রী তহমিনা (৩২)।


পুলিশ জানায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ দুপুর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটেছে এবং এর পেছনে পারিবারিক বিরোধ, কলহ এবং সহিংসতা প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। দুর্গাপুর বরাবরই আত্মহত্যাপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত, এবং রাজশাহী জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে এ উপজেলায়।


রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘দুজন মারা গেছে। দুর্গাপুর থেকে আসা বিষপানের আরও তিনজনকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি।’ এদিকে, আরো যেসব ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন, তারা হলেন- উপজেলার পানানগর গ্রামের ময়না বিবি (৪৫), বেড়া গ্রামের রেজাউলের শিশুসন্তান তানজিমুল (৩), কানপাড়া গ্রামের বীথি (৩০), দেবীপুর গ্রামের মহনা (১৮), পানানগর গ্রামের আ. সাত্তার (৪৫), কাশেমপুর গ্রামের ইরিন খাতুন (২০) এবং সায়বাড় গ্রামের হাবিবা খাতুন (১৫)।


উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মেহেদী হাসান জানান, ‘কীটনাশক পান করে গত ২৪ ঘণ্টায় আটজন রোগী ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, অন্য তিনজনকে দুর্গাপুরে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’


দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহিম আলী জানান, ‘কীটনাশক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা ও মৃত্যুর ঘটনায় থানায় দুটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে নানা কারণে, তবে পারিবারিক কলহ ও সহিংসতা প্রধান কারণ।’


এ ঘটনাগুলোর পেছনে যেসব পারিবারিক সমস্যার কথা উঠে এসেছে, তা সামাজিক সমস্যা ও মনস্তাত্ত্বিক চাপের প্রতি এক গভীর সংকেত দেয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, পারিবারিক সহিংসতা এবং সামাজিক অসন্তুষ্টি আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এজন্য এই সমস্যা সমাধানে সামাজিক এবং প্রশাসনিক পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।