ভারত থেকে বক্তব্য, কূটনৈতিক টানাপোড়েন বাড়ালেন শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:১৬ অপরাহ্ন
ভারত থেকে বক্তব্য, কূটনৈতিক টানাপোড়েন বাড়ালেন শেখ হাসিনা

ভারতে অবস্থান করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার পবন বাধেকে তলব করে ঢাকা। শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দেন এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  


শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়, শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করেই দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করছেন, যা দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলছে। বুধবার এক বক্তৃতায় তিনি দাবি করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘মৃতদেহের উপর দিয়ে হেঁটে’ ক্ষমতা দখল করেছেন। তার এই বক্তব্যের পর বাংলাদেশ সরকার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আপত্তি তুলে ধরে।  


বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শেখ হাসিনার এই বক্তব্য দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে এবং দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের মাধ্যমে ভারত সরকারকে জানানো হয়েছে, শেখ হাসিনাকে এ ধরনের উসকানিমূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত রাখতে হবে।  


পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন দাবি করেন, শেখ হাসিনার বক্তব্যের জেরে দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনাও এরই ধারাবাহিকতা বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যা আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণ হতে পারে।  


বাংলাদেশ সরকার ভারতকে লিখিতভাবে জানিয়েছে যে, শেখ হাসিনা যেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য না দেন। সেই সঙ্গে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।  


এদিকে, ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ভারত বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে এবং দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আলোচনা চালিয়ে যাবে।  


পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার বক্তব্য এবং এর ফলে সৃষ্ট কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া আগামী দিনে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এর কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে।  


এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক অঙ্গনেও নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন মহল শেখ হাসিনার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বলছে, তিনি দেশের বাইরে থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, তার সমর্থকরা বলছেন, তিনি কেবল চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন।