টেকনাফ উপজেলার সাবরাংয়ে মগপাড়া গ্রামে পাঁচটি মেছো বাঘের শাবক উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে স্থানীয়রা মগপাড়া গ্রামের নজির মেম্বারের বসতবাড়ির কাছে শাবকগুলোকে বসে থাকতে দেখে। এর পরপরই স্থানীয় জনতা ঘটনাস্থলে এসে বাঘের শাবকগুলো দেখতে ভিড় করে।
ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী বিষয়টি স্থানীয় বনকর্মীদের অবহিত করেন। বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঘের শাবকগুলো উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত বাঘগুলোকে পরে টেকনাফ উপকূলীয় রেঞ্জ অফিসে নিয়ে আসা হয়। টেকনাফ উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা বশির আহমেদ জানিয়েছেন, বন বিভাগের কর্মীরা ৫টি মেছো বাঘের শাবক উদ্ধার করে গভীর জঙ্গলে অবমুক্ত করেছেন।
বন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শাবকগুলোর উদ্ধার এবং অবমুক্তকরণের পর তাদের নিরাপদে থাকা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে, বাঘের শাবকগুলো কোন জায়গা থেকে এসেছিল বা এর পেছনে কী কারণ ছিল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বাসিত হলেও, তাদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগও লক্ষ্য করা গেছে। মেছো বাঘ একটি নিরাপদ এবং বিপদমুক্ত পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে, আর তাই এ ধরনের ঘটনা বনাঞ্চলের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, মেছো বাঘের শাবকগুলো যদি মানুষ বা বসতবাড়ির কাছাকাছি চলে আসে, তবে তারা তাদের স্বাভাবিক পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। এই ধরনের ঘটনা সামনে আসলে স্থানীয় বাসিন্দাদের উচিত, তাড়াহুড়া না করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে খবর দেওয়া।
মগপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছে, গত কিছু দিন ধরে এই ধরনের ঘটনাগুলোতে তারা বেশ উদ্বিগ্ন। বনাঞ্চল থেকে বন্যপ্রাণী বিশেষত বাঘের আক্রমণের আশঙ্কা থাকতে পারে, বিশেষ করে যদি তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হুমকির মুখে থাকে।
স্থানীয়রা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের দিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি সরকারের কাছে আরও সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, বাঘের শাবকগুলো ছিল ক্ষুদ্র এবং শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও তারা সাধারণত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগে আসে না। তবে, কোন কারণে তারা জনবসতির আশেপাশে চলে এসেছে, সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বিষয়ে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বনাঞ্চল এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে।
এ ঘটনার পর থেকে টেকনাফের উপকূলীয় এলাকায় মেছো বাঘসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা ও অভয়ারণ্য রক্ষায় আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।