রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ আবদুল ছাত্তার স্কুল অ্যান্ড কলেজে এডহক কমিটির সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে। রবিবার সকাল দশটায় শুরু হওয়া এ কর্মসূচি দুপুর দুইটা চল্লিশ মিনিটে শেষ হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি, সভাপতির পদত্যাগ না হলে তারা আবারও আন্দোলনে নামবে। জানা গেছে, এডহক কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তাকে আগে এই প্রতিষ্ঠান থেকেই বহিষ্কার করা হয়েছিল। এমন একজন ব্যক্তিকে সভাপতি করা মেনে নিতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। তারা এই পদ থেকে জসিম উদ্দিনের পদত্যাগ বা অপসারণ চায়। শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের এই দাবির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এ প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে তারা আপাতত আন্দোলন স্থগিত করেছে। তবে তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আবারও কর্মসূচি শুরু করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
রবিবার দুপুরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি ঘটনাস্থলে অবস্থান করার সময় শিক্ষার্থীরা তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে। প্রায় এক ঘণ্টা পর স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান তিনি। পরে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি তুলে ধরে এবং একাডেমিক সুপারভাইজারের মাধ্যমে লিখিত আবেদন জমা দেয়। এসময় সুপারভাইজার আশ্বস্ত করেন যে, শিক্ষার্থীদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন জানান, তিনি বরিশালে ছিলেন এবং ঘটনাস্থলে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন না। তবে যতটুকু জেনেছেন, শিক্ষার্থীরা সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করেছে। তিনি আরও জানান, বোর্ডের অনুমোদন অনুযায়ী নিয়ম মেনে জসিম উদ্দিনকে সভাপতি করা হয়েছে। সভাপতির পদত্যাগ করার বিষয়টি সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত এখতিয়ার এবং বোর্ড চাইলে কমিটি ভেঙে দিতে পারে।
অন্যদিকে এডহক কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি এসব অভিযোগকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তার মতে, তিনি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছেন এবং এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান জানান, চরমোন্তাজ আবদুল ছাত্তার স্কুল অ্যান্ড কলেজের এডহক কমিটি নিয়ে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। একাডেমিক সুপারভাইজারের অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে সুপারভাইজার নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আবারও কর্মসূচি পালন করবে। শিক্ষার্থীরা জসিম উদ্দিনের পদত্যাগ বা অপসারণের জন্য অনড় অবস্থানে রয়েছে। তারা মনে করছে, এডহক কমিটির সভাপতির পদে এমন একজন ব্যক্তির থাকা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবকরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, প্রতিষ্ঠানের উন্নতি এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এতে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও শিক্ষার মান বজায় থাকবে।
চরমোন্তাজ আবদুল ছাত্তার স্কুল অ্যান্ড কলেজের এই পরিস্থিতি স্থানীয়দের মধ্যেও চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষও আশা করছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।