পিরোজপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অসৎ আচরণ এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত এক বছরে সহকর্মীরা তাকে বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে সরকারি কোয়াটারে অবৈধভাবে বসবাস, ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, এবং অফিসের স্টাফদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার।
ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন ২০২২ সালের মার্চ মাসে শরণখোলা উপজেলা থেকে পিরোজপুর সদর উপজেলায় বদলি হয়ে আসেন। অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি ওই সময়ে সরকারি কোয়াটারে বসবাস করতে শুরু করলেও নির্ধারিত ভাড়া (৪৯,৯৮০ টাকা) কোষাগারে জমা দেননি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৩১ মাস ধরে সরকারি কোয়াটারে বসবাস করলেও তিনি এক টাকাও ভাড়া পরিশোধ করেননি। এমনকি, এই বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার করেছেন তিনি, দাবি করেছেন যে, তিনি কোনো সরকারি কোয়াটারে থাকেন না এবং প্রতিদিন অফিস শেষে খুলনায় নিজের বাড়িতে চলে যান।
এছাড়া, পিরোজপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন অফিসের স্টাফদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এবং তাদেরকে ভুয়া বিল ভাউচার গ্রহণের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এমনকি, কোনো কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে শাস্তিমূলক নোটিশ দেওয়া হত। একাধিক স্টাফ জানিয়েছেন, তিনি তাদের সম্মান দিতেন না এবং প্রাপ্য মর্যাদা থেকে বঞ্চিত রাখতেন।
পিরোজপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের স্টাফ মোঃ নাছির ফকির বলেন, “ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন যোগদানের পর থেকেই আমাদের সঙ্গে বাজে আচরণ শুরু করেন। যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বললে আমাদের শাস্তি দেওয়া হত। তার এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা সিভিল সার্জন অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি এবং তদন্তের দাবি জানিয়েছি।”
এই বিষয়ে, পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের পিছনের সরকারি কোয়াটারের বাসিন্দারা জানান, ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন কোয়াটারের ১নং ভবনের দ্বিতীয় তলায় বসবাস করছেন। তবে তার দাবির বিপরীতে, তিনি কোয়াটারে থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, "আমি সেখানে থাকি না, অফিস শেষে খুলনায় চলে যাই।"
পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান বলেছেন, “ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এখন দেখা যাচ্ছে, পিরোজপুরের এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন, এবং স্টাফদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।