বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের মুখে আনার জন্য বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সোমবার (১৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক শুনানিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এ সময়, ট্রাইব্যুনাল জানতে চায়, শেখ হাসিনা বর্তমানে কোথায় আছেন? জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, "শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আছেন এবং ইন্টারপোলসহ বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।"
এই শুনানিতে, ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, "পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে হেফাজতের ওপর আক্রমণ, এবং ২০১৩-১৪ সালে আওয়ামী লীগের শাসনামলে সংঘটিত গণহত্যাসহ সকল মানবতাবিরোধী অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন শেখ হাসিনা।" তিনি আরও দাবি করেন, "গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা নিজে এসব অপরাধ সংঘটিত করেছেন এবং তার সহযোগীরা এ কাজে সহায়তা করেছেন।"
বিশেষত, ২০১৮ সালের জুলাই-অগাস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ২৫ হাজারের বেশি আহত হওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রতি সমালোচনা করা হয়। প্রসিকিউটর বলেন, "এই গণহত্যা ও সহিংসতার মাধ্যমে শেখ হাসিনা ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করেছেন।"
শুনানির শেষে, আদালত ১৩ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই ১৩ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, শাজাহান খান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, সালমান এফ রহমান, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
এর আগে, সকালে এই ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। এর পর সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে তাদের গারদখানা থেকে আদালতে আনা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।