ছাত্রজনতার মামলা: এফআইআর থেকে নাম প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
এহসান বিন মুজাহির জেলা প্রতিনিধি , মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: শুক্রবার ১১ই অক্টোবর ২০২৪ ১১:১১ পূর্বাহ্ন
ছাত্রজনতার মামলা: এফআইআর থেকে নাম প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া

সাধারণ জনগণের কাছে আইনজীবী ও মামলার প্রক্রিয়া নিয়ে ধারণা প্রায়ই সীমিত থাকে। তবে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রজনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকে এই বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আসুন, এফআইআর ও নাম প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সংক্ষেপে জানি।


অপরাধ সংঘটিত হলে থানায় যে প্রতিবেদনটি দেওয়া হয়, তাকে এজহার বা এফআইআর বলা হয়। এটি মামলার প্রাথমিক ধাপ। এজহার দায়েরের পর থানার ওসি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠান, যেখানে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।


এফআইআর দাখিলের পর, পুলিশ অপরাধের তদন্ত করে এবং প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। তদন্তের সময় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষীদের বিবৃতি নেওয়া এবং অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে থাকে।


তদন্ত শেষে পুলিশ দুই ধরনের রিপোর্ট দাখিল করে: চার্জশিট ও ফাইনাল রিপোর্ট। চার্জশিটে অভিযুক্তের নাম উল্লেখ করা হয় যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, অন্যথায় ফাইনাল রিপোর্টে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।


বর্তমানে ছাত্রজনতার আন্দোলন প্রসঙ্গে কিছু নিরপরাধের নাম এফআইআর এ যুক্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে, অভিযুক্তদের নাম প্রত্যাহারের জন্য বাদী থানায় আবেদন করতে পারেন। কিন্তু, পুলিশ তদন্তের আগে বাদীর আবেদন অনুযায়ী নাম প্রত্যাহার করতে বাধ্য নয়। তদন্তের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


বাদী আদালতে এসে অভিযুক্তদের পক্ষে সাফাই দিলে জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে তা পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন আসার আগে নির্ভর করে না। আদালতের বিচারিক এখতিয়ার এখানে গুরুত্বপূর্ণ।


বর্তমানে, মামলার বাদীদের উচিত তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে দ্রুত চার্জশীট বা ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে দাখিল করার ব্যবস্থা করা। নিরপরাধ ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য পুলিশকে আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। 


শেষে, আমি সংশ্লিষ্ট থানার ওসি এবং জেলা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—নিরীহ মানুষের হয়রানি রোধে তদন্ত কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করুন। আশা করি, সকলের সহযোগিতায় আইনগত প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন হবে। 


ধন্যবাদ, এডভোকেট নিয়ামুল হক ।