সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড চৌরাস্তা থেকে শুরু করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহর পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ বাজার রেল গেট পর্যন্ত সড়কটিতে এখন ধুলোর রাজ্য। প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ায় সড়কটি এখন জনজীবনের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ধুলাবালির কারণে শিক্ষার্থী, যাত্রী এবং পথচারীরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্বরোড এবং আশুগঞ্জ পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলেজ, প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত ধুলার প্রভাব পড়ছে। বাস, ট্রাক ও বালুবাহী ড্রামট্রাকসহ ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে রাস্তায় কুয়াশার মতো ধুলা উড়ছে। বিশেষ করে অটো, রিকশা, বাস ও মোটরসাইকেল চালকরা এই ধুলাবালির কারণে বিপদজনক অবস্থায় রয়েছেন।
এছাড়া, গত বছরের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-আখাউড়া মহাসড়কের চারলেন প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ রেখে পালিয়ে যায়। প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের অদৃশ্য হওয়ায় সড়কের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে সড়কটি খানাখন্দে ভরপুর এবং যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে।
স্থানীয় সিএনজি চালক আলামিন হোসেন বলেন, "ধুলোবালির কারণে সামনের গাড়িগুলো সহজে দেখা যায় না, এতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।" পথচারী রফিক হোসেনের মতে, "রাস্তার কাজ ফেলে চলে যাওয়ার কারণে এ অবস্থা হয়েছে। আগে সকালে-বিকেলে পানি দিয়ে ধুলো কমানো হতো, এখন আর কোনো ব্যবস্থা নেই।"
রেস্তোরাঁ ও ব্যবসায়ীরা জানান, ধুলোবালির কারণে তাদের পণ্য ও খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্কুল ছাত্র মো. মাসুদ ইসলাম বলেন, "মাক্স ব্যবহার করেও ধুলার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছি না।"
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, ধুলোবালিতে নানা রোগের জীবাণু থাকে যা শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, সর্দি, কাশি, টনসিল প্রদাহ, গলাব্যথা ও অ্যাজমা তৈরি করতে পারে। তারা আরও জানান, অতিরিক্ত ধুলোবালি মানুষের ফুসফুসকে আক্রান্ত করে এবং ফুসফুসের রক্তপ্রবাহ দুর্বল করে তোলে।
বিশ্বরোডের এই অবস্থা দ্রুত মোকাবেলা না করা হলে জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে, যা স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপরতার দাবি করছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।