দিগন্ত জোড়া সবুজে ঘেরা হাকিমপুরের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: সোমবার ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৪:৩৪ অপরাহ্ন
দিগন্ত জোড়া সবুজে ঘেরা হাকিমপুরের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ

সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা সবুজ প্রান্তরে পরিণত হয়েছে উত্তর জনপদের খাদ্য শস্য ভান্ডার নামে পরিচিত দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর হিলি উপজেলার প্রতিটি মাঠ। দিগন্ত জোড়া মাঠ যেদিকে তাকাই শুধু সবুজ আর সবুজ।সবুজের সমারোহে চোখ যেন জুড়িয়ে যায়। ভাদ্রের বাতাসে মিষ্টি রোদে হাসছে কৃষকের স্বপ্ন। সবুজ প্রকৃতি সবাইকে যেন মুগ্ধ করে তুলেছে। প্রতিটি মাঠ এখন কৃষকের সবুজ স্বপ্নে ছেঁয়ে গেছে। চলতি আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের মুখে এখন হাসির ঝিলিক।


উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এবার চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৮ হাজার ১ শত ১৭ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সরকারি ভাবে আমন মৌসুমে বিনামূল্যে প্রণোদনার সার ও বীজ দেওয়ায় ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে আমন ধানের বাম্পার ফলন এর আশা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষকের। দিনাজপুর জেলার খাদ্য উৎপাদনে এই উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের আমন চাষি মিজানুর রহমান বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবারও আমরা আমন ধান চাষ করেছি। এবারে আমন চাষের আগে মাঠে বৃষ্টি ছিলো না। তবে কোন ঝামেলা হয় নাই। আশা করছি, এবার আমন ধানে বাম্পার ফলন হবে। আমাদের এলাকায় এবার উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পর্যাপ্ত প্রণোদনা পেয়েছি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে জমিতে এখন আমরা জমিতে ঔষধ স্প্রে করতেছি। 


উপজেলার বোয়ালদাড় ইউনিয়নের বিশাপাড়া গ্রামের কৃষক আলম হোসেন বলেন, ধান গাছের পরিচর্যা, সময় মতো সার ও কীটনাশক দেওয়ায় এখন গাছ সবুজ বর্ণ ধারণ করেছে। চারিদিকে যেন সবুজের সমারোহ। যেদিকে তাকাই দৃষ্টি যেন জুড়িয়ে যায়।


তিনি আরও বলেন, এবারে আমাদের এলাকায় আমন ধানে এখনও তেমন কোন পোকার আক্রমণ নেই। তবে কৃষি অফিস এর পরামর্শ নিয়ে অনেক কৃষক জমিতে কীটনাশক স্প্রে করিতেছে। তবে এবার শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। বাজারে সবকিছুর দাম বেশি এতে আমরা আমাদের অতিরিক্ত খরচ এবং বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব বলে মনে করছি।


উপজেলা উপ-সহকারী (ফিল্ড অফিসার) রাজিব আহম্মেদ বলেন, আমন মৌসুমে ধান চাষে কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারেন এবং কৃষকরা যেন আমন চাষে কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়েন এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। যেখানেই সমস্যা সেখানেই আমাদের উপস্থিতি এবং সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।


এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, এবারের আমন মৌসুমে হাকিমপুর উপজেলায় ৮ হাজার ১'শ ১৭ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সচেষ্ট হতে আমরা সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবার হাকিমপুর হিলি এলাকার কোথাও তেমন কোন পোকার আক্রমণ নেই। ফলে আমরা আশা করছি, আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে। আমাদের উপজেলায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।