সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হোটেলকর্মী সিয়াম সরদার হত্যা মামলায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলাটি ২০১৯ সালে রাজধানীর মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া সিয়াম সরদারের (১৭) হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দায়ের করা হয়। সিয়াম, যিনি মিরপুর-১০ এলাকায় হোটেল রাব্বানীতে কাজ করতেন, ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, নিহত সিয়াম সরদার রাজধানীর মিরপুরের হোটেল রাব্বানীতে কর্মরত ছিলেন। গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে মিরপুর-১০ নম্বরে গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা সোহাগ সরদার ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। আদালত সেই মামলা মিরপুর থানাকে এজহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলায় আসামি হিসেবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের নওরতন কলোনি থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে এবং সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে মাহবুব আলীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর সোমবার সকালে তাদের ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান। অপরদিকে, তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। তবে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলাটি রাজধানীতে গত কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে সিয়াম হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে জনমনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের সময় এমন একটি হত্যাকাণ্ড ঘটায় অনেকেই এ ঘটনায় বিচার চাইছে, বিশেষ করে নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় অধিবাসীরা।
এই মামলার তদন্ত এখনো চলমান এবং বিচার প্রক্রিয়া কবে নাগাদ সম্পন্ন হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে আসাদুজ্জামান নূর এবং মাহবুব আলীর কারাগারে পাঠানো এই মামলার প্রক্রিয়াকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।