ঝালকাঠিতে জমি বিরোধের জেরে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা, আহত ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি (ঝালকাঠি)
প্রকাশিত: শনিবার ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৪:৫৬ অপরাহ্ন
ঝালকাঠিতে জমি বিরোধের জেরে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা, আহত ৪

ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলায় জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া এলাকায়। নিহত বৃদ্ধের নাম সুলতান খান (৭০), তিনি জাঙ্গালিয়া এলাকার মৃত ওয়াজেদ আলি খানের ছেলে। এ ঘটনায় আরো তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন আফজাল হোসেন খান, হেলাল খান, এবং হেলেনা বেগম।


নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিপক্ষের সাথে জমি নিয়ে তাদের বিরোধ চলছিলো। এ বিরোধ নিয়ে আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। শনিবার সকাল ১১ টার দিকে প্রতিপক্ষ বাচ্চু, জাকির, ইলিয়াস, শহিদ, মনির, স্বপনসহ আরও কয়েকজন বিরোধপূর্ণ জমিতে জোর করে ফসল রোপণ করতে আসে। এ সময় নিহত সুলতান খানের পুত্রবধূ রুমা বেগম প্রতিপক্ষের কার্যক্রমে বাধা দেন, এতে প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর হামলা চালায়। রুমাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে সুলতান খানকেও নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়াও, রুমাসহ আরও তিনজন আহত হন।


ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. শাহেদ খান জানান, সুলতান খানকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল এবং আহত তিনজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।


কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, "আমরা ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" তিনি আরও জানান, ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।


এই হত্যাকাণ্ডের ফলে জাঙ্গালিয়া এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহত সুলতান খানের পরিবার বিচার দাবি করেছে এবং এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।


জমি সংক্রান্ত বিরোধ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাধারণ একটি সমস্যা, যা মাঝে মাঝে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের রূপ নেয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জমি বিরোধ নিয়ে সময়মতো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সংঘাত সমাধানের যথাযথ উদ্যোগ না নিলে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে। এলাকাবাসী এবং স্থানীয় নেতারা এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন, যাতে এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা পুনরাবৃত্তি না হয়।