জালিমদের প্রতি দয়া শহীদদের রক্তের অবমাননা: নাজিরপুরে মাসুদ সাঈদী

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৈয়দ বশির আহম্মেদ, (জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুর)
প্রকাশিত: শনিবার ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:৪৫ অপরাহ্ন
জালিমদের প্রতি দয়া শহীদদের রক্তের অবমাননা: নাজিরপুরে মাসুদ সাঈদী

গত ১৭টি বছর সারা দেশে অত্যাচার, জুলুম, স্ট্রিম রোলার চালিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা এ প্রত্যেকটি জুলুম ও হত্যার বিচার চাই। আমরা কাউকে ক্ষমা করিনি। জালিমের প্রতি দয়া দেখানো মানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াত নেতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী।


শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শাঁখারীকাঠী ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


মাসুদ সাঈদী বলেন, আল্লামা সাঈদীকে হাসপাতালে এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার বাবার সঙ্গে একটু দেখার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাসপাতালে চেষ্টা করেছি। এ ছাড়া দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছি, দরজায় দরজায় কেঁদেছি কিন্তু ওই খুনি হাসিনা একটি বারের জন্যও আমাকে বাবার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি।


পৃথিবীর কোন আইনে আছে মৃত্যু পথযাত্রী পিতার সঙ্গে তার সন্তানকে দেখা করতে দেয় না।  তিনি আও বলেন, যারা পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে ব্যক্তিগত সম্পদ রক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরি বাঁচানোর কারণে আ.লীগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে বাধ্য হয়েছেন তাদের সাধারণ ক্ষমা। কিন্তু যারা ফাঁসির দড়ি নিয়ে মিছিল করেছেন তাদের ক্ষমা নেই। আ.লীগের জন্মই হয়েছিল হত্যার মধ্য দিয়ে।  


দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী বলেন, শেখ মুজিব ১৯৬৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার শাহেদ আলীকে সংসদে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। আ.লীগের ইতিহাসই ছিল হত্যার ইতিহাস। ঢাকার পিল খানায় বাংলাদেশের গর্ব, অহংকার সেনাবাহিনীর ৫৭ জন গর্বিত সন্তানকে তারা হত্যা করেছিল, যা একটি যুদ্ধেও এত সংখ্যক অফিসার শহীদ হয় নাই।  তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালে তথাকথিত ওই ক্যাঙ্গারু ট্রাইব্যুনাল থেকে আল্লামা সাঈদির মিথ্যা মামলার রায় দিয়েছিল, সেই প্রতিবাদে যখন সাড়া বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছিল তখন ওই কুরআন প্রেমিক জনতার বুকে ওই খুনি হাসিনার নির্দেশে গুলি করে ৩০০ মানুষকে হত্যা করেছে।


৫মে শাপলা চত্বরে এই দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান আলেম সমাজ একত্রিত হয়েছিল নাস্তিকদের বিচারের দাবিতে। তখন ভারতের প্রেসক্রিপশনে খুনি হাসিনা রাতের আঁধারে হাজার হাজার আলেমকে গুলি করে হত্যা করেছিল। শেখ হাসিনার হাত লাখো মানুষের রক্তে রঞ্জিত করেছে। কর্মী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পিরোজপুর জেলা আমির অধ্যক্ষ তোফাজ্জাল হোসেন ফরিদ, পিরোজপুর জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, জেলা জামাতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, জামায়াত নেতা অ্যাড. আবু সাঈদ মোল্লা, উপজেলা জামাতের আমির আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি কাজী মোসলেউদ্দীন, উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মো. আবু হানিফ শেখ প্রমুখ।


উল্লেখ্য, গত ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে গত সাড়ে ১৫ বছরে জামায়াতের উদ্যোগে প্রকাশ্যে কোনো সমাবেশ হয়নি। গত ৫ আগস্ট আ.লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম সাবেক এমপি আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে ও ইন্দুরকানী (জিয়ানগর) উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী সমাবেশ করেন।