সম্প্রতি ভারতের সাথে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে রেল ট্রানজিট সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারকও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে এ নিয়ে দুই দেশই একমত হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ভারত সরাসরি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে রেলপথে পণ্য পরিবহণের সুবিধা পাবে।
প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশের গেদে-দর্শনা-চিলাহাটি হয়ে ভারতের হলদিবাড়ি-ডালগাও-হাসিমারা এই রুটটি ব্যবহার করা হবে। আগামী জুলাই মাসেই এই রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন পরিচালনার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
এদিকে, রেলপথের ভিন্নতা থাকায় আপাতত বেনাপোল থেকে টঙ্গী হয়ে আগরতলা-ত্রিপুরা রুটে ট্রানজিট পাচ্ছে না ভারত। তবে, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এই রুটটিতে ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করেছে। এছাড়া, আপাতত ভারতের বালুরঘাট-হিলি-গীতলদহসহ অন্যান্য রেলপথে ট্রানজিট পরিকল্পনায় নেই।
বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ভূখন্ড থেকে দর্শনা-চিলাহাটি রুট ছাড়া অন্য কোন রুটে রেল ট্রানজিটের সুযোগ নেই। গঙ্গাসাগর-আগরতলা রেলপথটি আপাতত ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এই রুটটির টঙ্গী থেকে আখাউরা পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ। আর ভারতের ট্রেনগুলো ব্রডগেজ। তাই এই পথে আপাতত ট্রানজিটের সুযোগ নেই।
এদিকে ভারত কি রেল ট্রানজিটের একতরফা সুবিধা পাচ্ছে, এমন প্রশ্নও উঠছে। এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশও ভারতের ভূখন্ড ব্যবহার করতে পারবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, হাসিমারা রুট দিয়ে ভুটানেও পণ্য পরিবহন করা যাবে। সমঝোতা স্মারকটিতে উভয় দেশের ওপর দিয়েই রেল চলাচলের বিষয়টি রয়েছে। এটি একতরফা করা হয়নি। এর ফলে আঞ্চলিক যোগাযোগের দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, নেপালের সাথে বাংলাদেশের করিডোর রয়েছে। নেপালের সাথে পণ্য আমদানি-রফতানি চালু রয়েছে। তবে ভুটানের সাথে করিডোর নেই। তবে দেশটিকে এটিতে সংযুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ট্রানজিটের ক্ষেত্রে মাশুল বা ফি নির্ধারণ করা হবে। তাছাড়া, রেল ট্রানজিটে কোন কোন পণ্য পরিবহণ করা যাবে, নিরাপত্তা বিবেচনা করে এর তালিকা তৈরি করা হবে। তবে এতে আর্থিকভাবে বাংলাদেশ কতটা লাভবান হবে, এমন প্রশ্নও রয়েছে।
এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, এটি কোন লাভ-ক্ষতির বিষয় নয়, পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়। রেল চলাচলের সময়ের সমন্বয়, পণ্যের তালিকা, ফি নির্ধারণ ইত্যাদি কাজগুলো এখনো শুরু হয়নি। পরবর্তীতে দুই দেশ মিলে বিষয়গুলো নির্ধারণ করা হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, রেল ট্রানজিটে উভয় দেশই পণ্য পরিবহন করতে পারবে। এক্ষেত্রে একদেশ অপর দেশকে ফি দেবে। এর ফলে বাংলাদেশ লাভবান হবে। এখানে ক্ষতির কোনো বিষয় নেই।
রেল মন্ত্রণালয় জানায়, নেপাল এবং ভুটানও এই সমঝোতা স্মারকের সুবিধা পাবে। এর মাধ্যমে ট্রান্স এশিয়ান রুটে যুক্ত হওয়া গেলে, সার্কের সকল দেশ সার্বিকভাবে লাভবান হবে।
সূত্র: যমুনা টেলিভিশন
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।