প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ১০:৫২
মুসলিম জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হজ্ব এবং কুরবানি। এই দুটি ইবাদত শুধুমাত্র আচার-অনুষ্ঠান নয়, বরং তা আত্মত্যাগ, মানবতা ও আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের প্রতীক। কুরআন ও হাদিসে এর গুরুত্ব বহুবার বর্ণিত হয়েছে। প্রতি বছর জিলহজ মাসে হজ্ব ও কুরবানিকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই দুটি আমল পালনে একত্র হন। এর মাধ্যমে মুসলিম জাতি আল্লাহর নৈকট্য লাভে নিজেদের নিয়োজিত করে।
হজ্ব হল ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি। যারা শারীরিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান, তাদের জন্য হজ্ব ফরজ করা হয়েছে। প্রতি বছর কোটি কোটি মুসলমান সৌদি আরবের মক্কায় গিয়ে হজ্ব পালন করেন। হজ্বের মূল শিক্ষা হল আল্লাহর পথে আত্মসমর্পণ, ধৈর্য, সহনশীলতা এবং একাত্মতা। হজ্বে গিয়ে মুসলমানরা এক রঙের কাপড় পরিধান করে সব ধরনের পার্থক্য ভুলে এক কাতারে দাঁড়ান, যা মানব জাতির জন্য এক অনন্য শিক্ষা।
অন্যদিকে কুরবানি শুধুমাত্র পশু জবাই নয়; এটি ইব্রাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) এর ত্যাগ ও আনুগত্যের স্মারক। ইব্রাহিম (আ.) যখন আল্লাহর আদেশে প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি দিতে উদ্যত হন, তখনই প্রমাণ হয়—আল্লাহর আদেশের সামনে পারিবারিক আবেগও কোনো বাধা হতে পারে না। এই আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবেই আজও মুসলমানরা কুরবানি করে থাকেন।
আসন্ন ঈদুল আজহার সময়ে মুসলমানরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, খাসি, উট ইত্যাদি পশু কুরবানি দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন। এই কুরবানি যেন শুধুই রীতিগত না হয়—তা যেন সত্যিকার ত্যাগ ও বিনয় প্রকাশ করে। কুরবানির মাংস গরীব-অসহায়দের মাঝে বণ্টন করার মাধ্যমে সামাজিক সহমর্মিতা ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইসলামে কুরবানি ও হজ্বের মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধি এবং সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠার যে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, তা আমাদের জীবন ও সমাজকে আলোকিত করতে পারে। আজকের প্রেক্ষাপটে কুরবানি ও হজ্বের মর্ম উপলব্ধি করে জীবনযাপনে তা প্রতিফলন ঘটানো জরুরি।
বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে এই আদর্শে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন, যাতে তারা ত্যাগ, মানবতা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে জীবন গঠনে আগ্রহী হয়। কুরবানি ও হজ্ব থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা হোক আমাদের জীবনের নিত্যনতুন অনুপ্রেরণা