আশাশুনিতে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে নোট-গাইড বই নির্বাচন করার অভিযোগ উঠেছে। অভিভাবকদের জিম্মি করে শিক্ষার্থীদের বোর্ড অনুমোদিত বইয়ের বাইরে নোট-গাইড বই কিনতে বাধ্য করার কথা জানিয়েছেন তুহিন উল্লাহ তুহিন নামের একজন অভিভাবক। তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান তদন্ত শুরু করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, আশাশুনি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি পাঞ্জেরী প্রকাশনীর নোট-গাইড বই তাদের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিযোগ অনুসারে, শরাফপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এক সভায় পাঞ্জেরী ও পপি প্রকাশনীর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। দুই পক্ষের মধ্যকার প্রতিযোগিতার ফলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। জানা যায়, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স সমিতির সাথে ১০ লক্ষ টাকার চুক্তি করেছে এবং ৭ লক্ষ টাকা অগ্রিম দিয়েছে।
সভায় উপস্থিত থাকা একজন জানান, পপি প্রকাশনী ১২ লক্ষ টাকার প্রস্তাব দিয়েছিল, যা পাঞ্জেরীর প্রস্তাবের চেয়ে বেশি। তবে শিক্ষক সমিতি পাঞ্জেরীর সাথে চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম এই বিষয়ে জানান, সমিতির মিটিংয়ে বার্ষিক আয়-ব্যয় এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বই নির্বাচনের বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি এবং কোনো চুক্তি বা অর্থ লেনদেনের কথা অস্বীকার করেন তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান জানান, নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায়ের নির্দেশনায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হয়েছে। কোনো গাইড বা নোট বই শিক্ষার্থীদের কাছে পাওয়া যায়নি। প্রধান শিক্ষকদের বোর্ড অনুমোদনবিহীন বই ব্যবহার না করতে সতর্ক করা হয়েছে।
অভিযোগ অনুসারে, পাঞ্জেরী, পপি এবং পপুলার লাইব্রেরীর প্রতিনিধিরা তাদের বই প্রচলনের জন্য শিক্ষকদের প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে। শিক্ষক সমিতির কয়েকজন সদস্য আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের বোর্ড অনুমোদিত বইয়ের বাইরে বই কিনতে বাধ্য করা অন্যায়। এতে শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অভিভাবকদের বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে। তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন।
তদন্ত চলমান থাকলেও অনেকেই শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের দাবি, শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ কমাতে এবং সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এদিকে, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ অস্বীকার করলেও অভিভাবকরা বিষয়টি নিয়ে সঠিক তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।