রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে ভারত থেকে আসা দুটি চোরাই মহিষ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর রোববার রাতে বিজিবির পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা করা হয়। রাজশাহী-১ ব্যাটালিয়নের রাজাবাড়ি বিশেষ ক্যাম্পের হাবিলদার মো. শাহ আলম বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দাখিল করেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, নাজিরপুর গ্রামের মুকুল, বিয়ানাবোনা গ্রামের আক্কাস ও তার জামাই জীবন, মোল্লাপাড়া গ্রামের বাবলু ও তার ছেলে ডলার, এবং বিজয়নগর গ্রামের হামিদ। আসামিদের মধ্যে অনেকে বিএনপি ও যুবদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ভারত থেকে দুটি মহিষ চোরাই পথে আনার খবর পেয়ে বিজিবি নাজিরপুর গ্রামে অভিযান চালায়। অভিযানের সময় অভিযুক্ত মুকুল পালিয়ে গেলেও মহিষ দুটি জব্দ করে ক্যাম্পে নেওয়া হচ্ছিল। পথে রাজাবাড়ি এলাকায় দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিশোটা নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা বিজিবি সদস্যদের মারধর করে মহিষ দুটি ছিনিয়ে নেয়।
গোদাগাড়ী থানার ওসি রুহুল আমিন জানান, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং বিজিবির ওপর হামলার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার এবং ছিনতাই হওয়া মহিষ উদ্ধারে অভিযান চলছে। তিনি বলেন, খুব দ্রুতই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
অন্যদিকে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আক্কাসের মোবাইল নম্বরে ফোন করলে তার ভাই শরীফ জানান, আক্কাস বাড়িতে নেই এবং মহিষ নিয়ে কী ঘটেছে সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন।
বিজিবির ওপর এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এটিকে রাজনৈতিক অপব্যবহারের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। এ ঘটনায় তদন্তের পাশাপাশি যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের অনেকেই বিএনপি ও যুবদলের স্থানীয় ইউনিটের নেতৃত্বে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় চোরাচালানসহ অন্যান্য অনৈতিক কার্যক্রমের অভিযোগ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ ও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। একইসঙ্গে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলার মতো ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেই লক্ষ্যে প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
বিজিবির ওপর হামলার বিষয়টি স্থানীয় রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে। অনেকে মনে করছেন, এই ঘটনায় বিএনপি ও যুবদলের স্থানীয় ইউনিটের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।