খান লিটন (জার্মানি থেকে): একমাস হলো জার্মান আওয়ামীলীগের সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনের আগে জার্মান আওয়ামীলীগ চার ভাগে বিভক্ত ছিলো। দলীয় সভানেত্রী তথা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সদ্য মনোনীত সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামীলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও মুজিবর রহমান সভানেত্রীর বরাত দিয়ে সাবু-বাদল কমিটিকে বৈধতা দিয়ে তাদের তত্বাবধনে সম্মেলন করার সুপারিশ করেন ও নির্দেশনা দেন। দলের ঐক্যের স্বার্থে অন্যরা সবাই এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। সব গ্রুপ বিভিন্ন প্রস্তাব দেয় সাবুর মনোনীত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিকে—সাবুর সাথে দফায় দফায় মিটিং করে সবাই । সাবু সবার সব কথা মেনে নেয় । সবাই বেজায় খুশী, ঐক্যমতের কমিটি হবে ভেবে। সাবু-বাদল গ্রুপের বাইরের সবাই সিদ্ধান্ত নিলো যে—-সাবুকে ঠেকানো যাবে না সভাপতি হওয়া থেকে —তাই তারা তাদের মধ্যে একজনকে সাধারন সম্পাদক পদের জন্য মনোনীত করবে।
কিন্তু সবাই আলাদা আলাদাভাবে সাবুর সাথে লিয়াজো করেছেন সাধারন সম্পাদক হওয়ার জন্য, ফ্রাংকফোর্ট মেইন স্টেশনের আশেপাশে সাবুর আগে পিছে হেঁটে ফেইসবুক লাইভে ঐক্যতা প্রদর্শন করেছেন, শুধু একজন ছাডা, যা সম্মেলনের পরে প্রমান হয়। আর সাবু সবাইকে মুলা ঝুলিয়েছেন, যে যে রকম করে খায়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হয়ে এলেন, কেন্দ্রিয় আওয়ামীলীগের সন্মানিত প্রেসিড্য়াম সদস্য,সাবেক মন্ত্রী, কর্নেল (অব:)ফারুক খান এমপি। বিশেষ অতিথি সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবর্গ। সম্মেলনের প্রথম পর্বে ৩২ জন নেতা কর্মীর বক্তৃতার পর সাবু তার আবেগময়ী বক্তৃতায় নিজে কাঁদেন ও তার প্রতিদ্বন্দ্বীরাও জড়িয়ে ধরে কাঁদেন। যদিও প্রতিদ্বন্দ্বীরা বলেছেন এটা ছিলো তার অভিনয়।
দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের ছাডা ও সম্পূন্ন সাবুর রাজনৈতিক কারিশমায়। মূহুর্তে হল ভরে যায় বিভিন্ন শহর থেকে আসা কাউন্সিলরে। হল চলে যায় সাবুর পক্ষে। নিরাপত্তা ভেদ করে কাউন্সিলর ছাডা কারো ঢোকার অধিকার ছিলো না। হলে সাবুর পক্ষে মূহুর মূহুর শ্লোগান উঠতে থাকলে প্রতিদ্বন্দ্বীরা সম্মেলন বয়কট করে হল ত্যাগ করেন। যদি ও প্রতিদ্বন্দ্বীরা অভিযোগ করেছেন যে, জা’মাত, বিএনপি ও ছাত্র দের ভাড়া করে কাউন্সিলর বানানো হয়েছে ।সর্বপরী সাবুর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও কারিশমার বিজয় হয়। সম্মেলনে সাবু সভাপতি ও আব্বাস আলী চৌধুরী সাধারন সম্পাদক নির্বাচত হয়।
প্রতিদ্বন্দ্বীদের সহ-সভাপতি, সহ-সাধারন সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক , উপদেস্টা পদ দেন ও পদ প্রাপ্তরা মেনেও নেন। দুই পর্বের পুরো সময় ইউরোপীয়ান সাবেক সভাপতি অনিল দাশ গুপ্ত উপস্থিত ছিলেন।সম্মেলনের দিন ভোররাতে মারিয়ট হোটেল কক্ষে সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামীলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমানকে শারীরিক ভাবে লান্চিত করে নাকি কমিটির অনুমোদনে স্বাক্ষর রেখেছেন। সেখানে অনেক পদলোভী নেতারা উপস্তিত ছিলেন।কিন্তু মাল্টা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ছাডা কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেননি বা আজ অবধি অফিসিয়াল মুখ খোলেননি। স্বয়ং জনাব নজরুল এখন পর্যন্ত মুখ খুলেননি বা আইনি বা সাংগঠনিক ব্যাবস্থা নেননি। অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে প্রতিবাদ করেছেন ও পদ প্রাপ্তরা পদত্যাগ করেছেন। সম্মেলনের পরের দিন প্রধান অতিথিকে বিদায়ের সময় বিমান বন্দরে সাবু-আব্বাস ও অন্য নেতৃবর্গ তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন সম্মেলনের ভুলত্রুটির জন্য ও নতুন কমিটির জন্য দোয়া চায়।
ধীরে ধীরে সাবুর প্রতিদ্বন্দ্বীরা তথাকথিত ঐক্যমত হয় (যেখানে বহু মাতব্বর)। শোক দিবস পালন করেন, অবশ্য তারা উদযাপন করেন। জার্মানীতে নিযুক্ত রাস্ট্রদূত সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলে ।সাবু বহিস্কার হবে —এই ধারনা থেকে শোক দিবসে বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন। পাশাপাশি সাবু -আব্বাসরা তাদের শোক দিবসের অনুস্ঠানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি , যিনি দীর্ঘদিন সাবুর বিরোধিতা করেছিলেন , তিনি বলেন ——“বন্ধুরা , ভেবেছেন সাবু বহিস্কার হবে———আমি বহিস্কার হবো ——তাহলে আপনারা পদ লোভাতুররা পদ নিয়ে জার্মান আওয়ামীলীগের নেতা হবেন !!!!! এতো সোজা না —-যারা জাতীয় পার্টি বা অন্য কোন দল থেকে এসেছেন তারা নয়, একমাত্র আওয়ামীলীগরা ই জার্মান আওয়ামীলীগ চালাবে।” এই মর্মে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন ( রিপোর্ট দিবার্তা)।যারা জনাব নজরুলকে লান্চিত করেছেন বলে অভিযোগ সোস্যাল মিডিয়ায়, তারা নজরুল সাহেবের জন্মদিনে শুভেচ্ছা ও জানিয়েছেন। ঐক্যমতের সম্মেলন হলেও এভাবেই আবারো নেতৃত্বের কোন্দলে দল দ্বিধাবিভক্তিতে বহু গ্রুপে পরিনত হচ্ছে , ক্ষতি হচ্ছে দলের। তাই অতিসত্বর দলের হাই কমান্ডের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।