'এই সংসদ বাতিল করুন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন'

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাখাওয়াত জামিল সৈকত (অতিথি লেখক)
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
'এই সংসদ বাতিল করুন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন'

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন কথা একটাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। সংসদ বাতিল করুন, পার্লামেন্ট ভেঙে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা যদি খালেদা জিয়ার মুক্তি চান, তাহলে এখন থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হন। আন্দোলনের মাধ্যমে জালিম সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার লুটপাট করে সব টাকা সুইস ব্যাংকে পাঠিয়েছে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি টাকা সেখানে জমা হয়েছে। এই টাকা কারা পাঠিয়েছে, ক্ষমতায় কারা? কারা আজকে মেগা প্রজেক্টের নামে দেশে ‘ক্যাসিনো’ বসিয়ে রাষ্ট্রীয় টাকা লুটপাট করছে? ক্যাসিনো থেকে যাদের ধরা হয়েছে সবাই যুবলীগের নেতা। তারা বলছে, যারা ধরা পড়েছে তারা সবাই নাকি বিএনপির নেতা। আপনারা ১২ বছর ক্ষমতায়, তাহলে এতদিন কি আঙুল চুষছেন আপনারা? বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য বেগম খালেদা জিয়া তার ছোট ছেলে কোকোকে হারিয়েছেন। বড় ছেলে লন্ডনে। অথচ খালেদা জিয়ার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রের সংগ্রামের জন্য ১৮ মাস ধরে কারাগারে বন্দি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আজকের এই বিভাগীয় মহাসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে বেলা ১১টায় সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। এরপরও গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য জনসমাগম নয়, এক নায়কতন্ত্রের সরকারকে জানিয়ে দেয়া আমরা দেশনেত্রীর মুক্তি চাই।

তিনি বলেন, জনগণের একবার আস্থা চলে গেলে আস্থা আর ফিরে আসে না। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তি দিন। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। বিভাগীয় মহাসমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এ সরকারের দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট আর কমিশনের কারণে ব্যাংকগুলো আজ দেউলিয়া। দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। এ সরকার জনগণের ট্যাক্স তিনগুণ বৃদ্ধি করেছে। এরপরও সরকারের হাতে কোনো টাকা নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এখন থেকে কোনো বাধাই বাধা নয়। বাধা দিলেই বাঁধবে লড়াই। কোনো ছাড় নয়, অনেক হয়েছে। এবার সরকার পতনের পালা।

স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, এ সমাবেশ আন্দোলনের প্রস্তুতি মাত্র। এখান থেকেই আমাদের সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করে তা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। বর্তমান সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এখন থেকে যেখানে বাধা আসবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এ সরকার লুটের সরকার, চুরির সরকার। এখন মশার ওষুধও চুরি করে এ সরকার।

ময়মনসিংহ (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ও উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রহমান মিলন, ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা ওয়ারেছ আলী মামুন ও কামরুজ্জামান রতন।