প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১১:১৭
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম অবশেষে কারামুক্ত হয়েছেন। বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বলেন, "আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন।" তাঁর এই বক্তব্যে দীর্ঘদিনের বন্দিজীবন শেষে এক গভীর স্বস্তির প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়।
মুক্তির পর সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এখানে রাস্তা আটকে সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে, জনগণের যেন ভোগান্তি না হয়। এখন আর কথা বলবো না, আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে বারবার দেখা হবে, বারবার কথা হবে।” এ সময় তাঁর চোখেমুখে ছিল প্রশান্তি ও সংযমের ছাপ।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক ঐতিহাসিক রায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে খালাস ঘোষণা করেন। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় প্রদান করেন, যা দেশের রাজনৈতিক ও আইনি পরিমণ্ডলে নানা আলোচনার জন্ম দেয়।
এই রায়ের কপি বুধবার সকালেই কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে কারা কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে মুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে। মুক্তি পাওয়ার পর তাঁকে পিজি হাসপাতাল থেকে গ্রহণ করতে তাঁর স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
কারাবন্দি অবস্থায় আজহারুল ইসলাম দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছিল তার শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে। সেখানেই মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
আজহারুল ইসলামের মুক্তি ও খালাসের ঘটনা জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ এটিকে ন্যায়বিচারের বিজয় হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ সমালোচনাও করছেন।
যদিও তিনি মুক্ত হয়েছেন, তবে ভবিষ্যতে তার রাজনৈতিক অবস্থান ও কর্মকাণ্ড নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। আপাতত তিনি বিশ্রামে থাকবেন বলেই জানা গেছে, তবে শিগগিরই রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি তিনি।
মুক্তির পর এটিএম আজহারুল ইসলামের মুখে ছিল আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্যের মিলিত প্রতিচ্ছবি, যা দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ের এক নিঃশব্দ সাক্ষ্য হয়ে থাকবে।