প্রকাশ: ৬ মে ২০২৫, ১৬:৩৮
চার মাস চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে ফিরে মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। তার আগমনের খবরে আগে থেকেই সেখানে জড়ো হন বিপুল সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী। তারা ফুল, ব্যানার-প্ল্যাকার্ড ও শ্লোগানে স্বাগত জানান দলের প্রধানকে।
ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িবহর বিমানবন্দর এলাকা ত্যাগ করে। পথে পথে নেতাকর্মীরা দলীয় পতাকা নাড়িয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়। বেলা ১টা ২৫ মিনিটে গাড়িবহর পৌঁছায় ফিরোজা’য়। বাসার সামনে অপেক্ষমাণ আরও অনেক নেতাকর্মী তখন তাকে দেখে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
বাসার গেটের কাছাকাছি গাড়ি থামলে খালেদা জিয়া নিজেই গাড়ি থেকে নেমে ধীরে ধীরে হেঁটে বাসায় প্রবেশ করেন। এ সময় তাকে ধরে রাখেন দুই পুত্রবধূ—তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিদ্দিকী। দুইজনই তাকে ঘিরে রাখেন নিরাপত্তা ও স্নেহের ছায়ায়।
এর আগে একই ফ্লাইটে দেশে ফেরেন ডা. জোবাইদা রহমান, যিনি দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখলেন। তার আগমনেও আবেগময় পরিবেশ তৈরি হয় নেতাকর্মীদের মাঝে। অনেকে ‘নতুন নেতৃত্বের প্রতীক’ হিসেবে তার নামেও শ্লোগান দেন। ব্যানার-ফেস্টুনেও জোবাইদাকে নিয়ে ছিল আলাদা গুরুত্ব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন ফিরোজার সামনে। অনেকে চোখে জল নিয়েই খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় ছিলেন। তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন এবং তার নিরাপদ ফেরাকে ‘আল্লাহর কৃপা’ হিসেবে দেখেন।
খালেদা জিয়ার আগমনকে ঘিরে ঢাকার গুলশান এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুরো রাস্তাজুড়ে ছিল থেমে থেমে যানজট ও জনস্রোত। তারপরও নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস থামানো যায়নি।
দলের ভেতরে দীর্ঘদিন পর এমন উদ্দীপনাময় পরিবেশ তৈরি হওয়াকে অনেকে ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে খালেদা জিয়া ও জোবাইদা রহমানের একসাথে ফিরে আসাকে বিএনপির নতুন কৌশলগত দিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।