নওগাঁর বদলগাছীর বিখ্যাত “নাক ফজলি আম” অবশেষে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। এ স্বীকৃতির মাধ্যমে এই আম জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে আরও পরিচিতি পাবে এবং বাজারমূল্য ও চাহিদা উভয়ই বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পহেলা মে ২০২৫, বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী আনুষ্ঠানিকভাবে নাক ফজলি আম চাষী সমবায় সমিতি লিমিটেড-এর সভাপতি অ্যাডভোকেট মোজাফ্ফর হোসেনের হাতে জিআই সনদপত্র তুলে দেন।
কৃষি অফিসার বলেন, “নাক ফজলি শুধু একটি ফল নয়, এটি বদলগাছী উপজেলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির প্রতিচ্ছবি। এর মিষ্টি স্বাদ, বিশেষ গন্ধ ও পুষ্টিগুণের কারণে এটি দেশব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে।”
নাক ফজলি আমের জিআই স্বীকৃতির আবেদন করা হয়েছিল ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর থেকে আবেদন গ্রহণ করা হয় এবং জার্নাল নং ৫৬-এ প্রকাশিত হয়। পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে কোনো পক্ষ থেকে বিরোধিতা না আসায় এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।
এ স্বীকৃতি শুধু বদলগাছীর জন্য গৌরবজনক নয়, বরং দেশের কৃষি পণ্যের ব্র্যান্ডিং ও মূল্য সংযোজনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৫ সালে নওগাঁর ১১টি উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টন। এর মধ্যে নাক ফজলি একটি জনপ্রিয় জাত হিসেবে কৃষক ও ভোক্তাদের কাছে ব্যাপক পরিচিত।
জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় নাক ফজলি আমের চাষ আরও বাড়বে এবং কৃষকদের আয়ও বাড়বে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।