প্রকাশ: ১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩০
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাম্প্রতিক কার্যক্রম নিয়ে বিএনপির মধ্যে গভীর শঙ্কা ও সংশয় দেখা দিয়েছে। দলটির মতে, আন্দোলনের পেছনে অজানা ইন্ধন রয়েছে, যা রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। বৈঠকে ছাত্রদের 'জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র' ঘিরে তাদের উদ্দেশ্য ও পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
বৈঠকে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা উল্লেখ করেন, ছাত্রদের এ কার্যক্রম দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক কাঠামোকে উপেক্ষা করছে। তাদের দাবিগুলো মূলত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। ছাত্ররা সংবিধান পরিবর্তনের মতো দাবি তোলায় বিএনপি মনে করে, এটি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র। বৈঠকে জানানো হয়, ছাত্রদের উদ্যোগের পেছনে দৃশ্যমান কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি নেই, তবে তাদের কার্যক্রমে অজানা অর্থ ও পৃষ্ঠপোষকতা জড়িত থাকতে পারে।
বিএনপির মতে, ছাত্রদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে যে অর্থব্যবস্থা ও পরিকল্পনা কাজ করছে, তা প্রশ্নবিদ্ধ। ছাত্রদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট না হওয়ায় তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। স্থায়ী কমিটির এক নেতা উল্লেখ করেন, ছাত্রদের নেতাদের কেউ কেউ আগে ছাত্রলীগ বা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা তাদের রাজনৈতিক অভিপ্রায়কে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।
বিএনপির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ছাত্রদের ঘোষণাপত্র প্রকাশের সময় এবং পদ্ধতি সঠিক ছিল না। দলটির মতে, এটি আগেই করা উচিত ছিল, যাতে জনগণের সমর্থন নিশ্চিত করা যেত। তাছাড়া, ঘোষণাপত্রের বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা হয়নি। এ ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন নেতারা।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, ছাত্ররা যদি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে জনগণের কাছে যায়, তাহলে তাতে দলের আপত্তি নেই। তবে কোনো ষড়যন্ত্র বা কর্তৃত্ববাদী লক্ষ্য নিয়ে এগোলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। ছাত্রদের উদ্যোগ আওয়ামী লীগের সহযোগী প্ল্যাটফর্মে পরিণত হলে এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হলে বিএনপি তাতে কঠোর অবস্থান নেবে।
বিএনপির মতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে রাজনৈতিক দলগুলোকে দূরে সরিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধে দলটি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।