নরেন্দ্র মোদি টানা ২য় বারের মত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হতে আজ শপথ বাক্য পাঠ করবেন। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিপুল বিজয় নিয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইতোমধ্যে নয়া দিল্লি পৌঁছেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভারতের নয়া প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা আমন্ত্রণ পেলেও আমন্ত্রণ পাননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সম্প্রতি কাশ্মির ইস্যুকে কেন্দ্র করে পাক প্রধানমন্ত্রী এ নিমন্ত্রণ পাননি। তবে ভারতের প্রশাসন বলছে, ভারতে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে পাক প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
এদিকে এই শপথ অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দুপুর ২টা ১৮ মিনিটে টুইট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে নয়া দিল্লিতে পৌঁছান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব টি এস তিরুমূর্তি; ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী এবং বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলীও উপস্থিত ছিলেন। শপথ অনুষ্ঠান শেষে ভারতের রাষ্ট্রপতির দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন আবদুল হামিদ। নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনের ওই নৈশভোজে শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরাও অংশ নেবেন। শুক্রবার সকালে নয়া দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে আবদুল হামিদের সঙ্গে মোদির সাক্ষাতের সূচি রয়েছে। তিন দিনের সফর শেষে ওই দিন দুপুরে ঢাকায় ফিরবেন রাষ্ট্রপতি।
জানা যায়, রাষ্ট্রপতি ভবনের ফোরকোর্টে সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। তাকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এদিকে অনুষ্ঠানে মোদি ছাড়াও আরো বিদায়ী মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যরাও শপথ নিতে পারেন। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে এবার রেকর্ড সংখ্যক অতিথি হাজির থাকবেন মোদির শপথ অনুষ্ঠানে। মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ‘বিমসটেক’ অর্থাৎ ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল এন্ড ইকনোমিক কোঅপারেশন’ সদস্য ভুক্ত দেশগুলোর নেতারা। ভারত ছাড়াও বিমসটেক ভুক্ত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, নেপাল এবং ভুটান। এছাড়াও কিরগিজিস্তান গণপ্রজাতান্ত্রিক দেশের প্রেসিডেন্ট এবং মরিশাসের প্রধানমন্ত্রীকেও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘৩০ মে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকার জন্য ভারত সরকারের তরফে বিমস্টেক ভুক্ত সদস্য দেশগুলোর নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ‘প্রতিবেশি’ প্রথম’ সরকারের এই নীতিকে সামনে রেখেই এই আমন্ত্রণ। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকবেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ছাড়াও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে তেশরিং, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মইথ্রিপলা সিরিসেনা, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে.পি.শর্মা ওলি, কিরগিজিস্তানের প্রেসিডেন্ট সুরনবে জিনবেকভ, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ.উইন.মাইইন্ট, মরিশাসের প্রেসিডেন্ট প্রভিন্দ কুমার জুগনৌথ, থাইল্যান্ডের বিশেষ দূত গ্রিসাডা বুনার্ক।
বিদেশি রাষ্ট্র নেতাদের পাশাপাশি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, জেডিএস নেতা কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ. ডি. কুমারস্বামী, আপ প্রধান ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, টিআরসে প্রধান তথা তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে. চন্দ্রশেখর রাও, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, জেডিইউ প্রধান ও বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও ওয়াইএস জগন মোহন রেড্ডি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জি।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।