অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মোহাম্মদ গণি মিয়া (৩৫) নামে এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে ভারতের পুলিশ। গত রোববার দেশটির তারাগড় এলাকার খাদিম সাঈদ আনোয়ার নামের এক স্থানীয়র বাড়িতে তল্লাসী চালিয়ে গণিকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। এ সময় তার কাছ থেকে পাসপোর্ট, মোবাইল ফোনের পাঁচটি সিম কার্ড জব্দ করা হয়। সিমকার্ডগুলোর চারটি বাংলাদেশি ও একটি পাকিস্তানি বলে জানা গেছে। পুলিশি জিজ্ঞাসায় গণি মিয়া জানিয়েছেন, নিজের কিডনি বিক্রি করতেই তিনি ভারতে গিয়েছেন। এর আগেও কিডনি বিক্রি করতে আরও দুইবার ভারতের আজমিরে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। তবে কোনোবারই সফল হন নি গণি মিয়া। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন ভারতীয় প্রশাসন। তারা জানায়, এ ঘটনায় স্পষ্ট প্রমাণিত যে, ভারতে অবৈধভাবে মানব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেনা-বেচার ব্যবসা বেড়েছে। ভারতের রাজস্থান রাজ্যের আজমির দরগা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক কৈলাস বিশনয় বলেন, গত দুই মাস আগে গণি মিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেন। ভারতে এসে কিডনি বিক্রি করতে তিনি কয়েক দফা চেষ্টা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন দেশটির পুলিশ।২০০৮ সালে গণি মিয়া প্রথম অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন বলে তথ্য দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। সে সময় তিনি ৪ মাস চেন্নাইয়ে অবস্থানের পরও নিজের কিডনি বিক্রিতে সফল হতে পারেন নি।
এ বিষয়ে চেন্নাই পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, তামিল ও ইংরেজি ভাষা বলতে না পারায় ঠিকমতো যোগাযোগ করতে পারেন নি গণি মিয়া। এরপর দেশে ফিরে আসেন গণি মিয়া। আবার ৪ বছর পর একই উদ্দেশ্যে ভিসা নিয়ে তিনি ভারতে যান বলে জানিয়েছেন চেন্নাই পুলিশ। তিনি সরাসরি চলে যান চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকরা সে সময় তার অস্ত্রপচার করতে সম্মত হন নি। কারণ হিসেবে তারা জানান, গণি মিয়া মাদকাসক্ত ও শারীরিকভাবে দুর্বল। বুধবার তাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গণি মিয়ার আশ্রয়দাতা ভারতীয় নাগরিক খাদিম সাঈদ আনোয়ারকে খুঁজছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কিডনি বেচাকেনার অবৈধ ব্যবসা চলছে বহু দিন ধরেই৷ এর পেছনে কাজ করছে দালালদের এক সংগঠিত চক্র৷ বিশেষকরে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন হাসপাতলে এ চক্রটি কাজ করছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর। এক জরিপে প্রকাশ, প্রতিস্থাপনের জন্য ভারতে বছরে ২ লাখেরও বেশি মানুষের নতুন কিডনির দরকার হয়। কিন্তু বছরে আট হাজারের মতো কিডনি পাওয়া যায়। সে কারণেই চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ব্যবধান এত বেশি হওয়ায় কিডনি, লিভার হার্ট ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের লাভজনক অবৈধ ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠেছে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।