প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ২২:২
নওগাঁ শহরের কাজীর মোড় এলাকায় একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ৭০ বছর বয়সী বিলকিস আক্তার নামের এক বৃদ্ধা মাকে তার নিজের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার একমাত্র ছেলে জুমাতুল ইসলাম সৌরভের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে নিজের ফ্ল্যাটে প্রবেশের চেষ্টা করলে তিনি দেখতে পান সিঁড়ির মুখে লোহার কাচি গেইটে তালা ঝুলানো। ছেলের কাছে তালা খোলার অনুরোধ করলেও সৌরভ সাফ জানিয়ে দেন, তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এরপর তিনি গেটের সামনের গ্যারেজে বসে ধরনায় বসে থাকেন।
বিলকিস আক্তারের স্বামী বহু বছর আগে কাজীর মোড়ে ১০ শতক জমির ওপর একটি দুইতলা বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন, যার দুতলায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন। ২০২১ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর বসতবাড়ির মালিকানা নিয়ে ছেলে ও মায়ের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। ছেলের দাবি, পুরো সম্পত্তি লিখে দিতে হবে, অন্যথায় পরিবারে শান্তি থাকবে না। কিন্তু মা ও মেয়েরা এতে রাজি না হওয়ায় সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত ছেলে মাকে বাড়ি থেকে দূরে সরিয়ে দিতে এমন পদক্ষেপ নেন।
বিলকিস আক্তার জানান, তিনি মাঝে মাঝে মেয়ের বাড়িতে থাকলেও নিজের স্বামীর স্মৃতিবাহী বাড়িতে বাকি জীবন কাটাতে চান। কিন্তু ছেলে তার প্রবেশাধিকার অস্বীকার করছে। এমনকি ছেলে তার গায়ে হাত তোলার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান মেয়ের জামাই ডা. আবুজার গাফফার। তিনি বলেন, নির্যাতনের ঘটনার পর তার স্ত্রী ও শ্যালিকা তাদের অংশের জমি মায়ের নামে লিখে দেন, ফলে এখন কাগজে-কলমে বিলকিস আক্তার বাড়ির প্রায় ৭০ শতাংশের মালিক।
অভিযোগের বিষয়ে ছেলে জুমাতুল ইসলাম সৌরভ বলেন, মায়ের কারণে নিজের জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে এবং আগেও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আদালতের নির্দেশে মা আপাতত মেয়ের জিম্মায় থাকছেন। এ অবস্থায় নতুন করে কোন ঝামেলা যাতে না হয়, সে কারণেই তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
এ ঘটনায় নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, বিষয়টি জানার পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ঘটনায় শহরজুড়ে তীব্র আলোচনা ও নিন্দা ছড়িয়ে পড়েছে।