প্রকাশ: ৮ জুন ২০২৫, ১৮:৩১
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে ফের শুরু হয়েছে সহিংসতা ও অস্থিরতা। শনিবার বিকেল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে ইম্ফলের কিছু এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের তীব্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য প্রশাসন কিছু এলাকায় কারফিউ জারি করেছে এবং বন্ধ করে দিয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
মণিপুরের বিষ্ণুপুর, ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবল ও কাকচিংসহ কয়েকটি জেলায় একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি মানুষ একত্রিত হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কিছু ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে সমাজের আবেগকে উস্কে দিতে চাইছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। এ কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর বার্তা ও সহিংস ভিডিও ছড়ানোর আশঙ্কায় পাঁচদিনের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে।
অশান্তির সূত্রপাত হয় আরামবাই টেংগোল গোষ্ঠীর পাঁচজন সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ার পর। অভিযোগ উঠেছে, মেইতেই সম্প্রদায়ের কিছু লোক পশ্চিম ইম্ফলের কোয়াকেইথেল পুলিশ পোস্টে হামলা চালায়। এই ঘটনার পরপরই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়, এবং সেই গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ।
গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে রাজপথে নামে বিক্ষোভকারীরা। তারা টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায় এবং রাস্তা অবরোধ করে রাখে। কিছু এলাকায় গুলির শব্দ শোনা যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন দুই সাংবাদিকসহ তিনজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলি ছোঁড়ে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আরও বিস্ফোরক তথ্য। গ্রেপ্তার হওয়া গোষ্ঠীর নেতা কানন সিংয়ের মুক্তির দাবিতে একদল যুবক নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছেন। এই কানন সিং ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে হামলা ও অপহরণের ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন।
গত এক বছর ধরেই মণিপুর নানা ইস্যুতে উত্তপ্ত। সম্প্রদায়গত সংঘাত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং প্রশাসনের প্রতি আস্থাহীনতা রাজ্যটিকে বারবার সহিংসতার মুখে ঠেলে দিচ্ছে। নতুন করে সংঘর্ষের এই ঢেউ আবারও মণিপুরকে অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দিয়েছে।