প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৫, ১২:৩
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহার সম্প্রতি এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে, যেখানে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় বজ্রপাতের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৯ জন। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই মৃত্যু ঘটনা ছড়িয়ে থাকলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নালন্দা জেলা, যেখানে মারা গেছেন পাঁচজন। বজ্রপাতে প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ভৈরালি জেলায় চারজন, পাটনা ও বাঁকা জেলায় দুজন করে এবং শেখপুরা, নওয়াদা, জেহানাবাদ, আওরঙ্গাবাদ, জামুই ও সমস্তিপুর জেলায় একজন করে প্রাণ হারিয়েছেন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এই হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে চার লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জনগণকে খারাপ আবহাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান, বিশেষ করে বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিহার রাজ্য বর্ষা মৌসুমে প্রায় প্রতিবছরই বজ্রপাতের আশঙ্কার মধ্যে থাকে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিহারের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, চলমান মৌসুমে বজ্রপাতের প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। ফলে সাধারণ মানুষকে যতটা সম্ভব ঘরের ভেতরে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বজ্রপাতে মৃত্যু সাধারণত খোলা মাঠ, ধানক্ষেত, গাছের নিচে অবস্থান করা বা উঁচু স্থানে থাকার সময় বেশি ঘটে। তাই কৃষিজীবী মানুষের জন্য এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দেয়। অনেকেই জীবিকার তাগিদে বাইরে থাকেন, যা তাদের আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।
স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতামূলক প্রচার ও সতর্কতা সিস্টেম জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। বিভিন্ন জেলা প্রশাসন লাউডস্পিকার, মোবাইল বার্তা ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করতে কাজ শুরু করেছে।
বজ্রপাতের শিকার হওয়া পরিবারগুলো এখন শোকের ছায়ায় আচ্ছন্ন। অনেকেই হারিয়েছেন পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্য, যা ভবিষ্যতে তাদের জীবনে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।
এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরামর্শ মেনে চললে অনেক প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হতো বলেও অভিমত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে পরবর্তী সময়ে আরও বেশি সতর্ক ও প্রযুক্তিনির্ভর পূর্বাভাস ব্যবস্থার ওপর জোর দিতে হবে বলে মত বিশ্লেষকদের।