টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বরিশালের বৃহৎ মৎস্য ভান্ডার পোর্টরোডে ইলিশের আমদানী শুরু হয়েছে। তবে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছে না বরিশালের অভ্যন্তরীন নদীগুলোতে। নদী থেকে ফিরে আসা জেলেরা জানিয়েছেন নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর গত বছরের তুলনায় এবার ইলিশ মিলছে কম। গত বছর নিষেধাজ্ঞার পরদিন প্রায় সাড়ে ৭শ’ মন ইলিশ আমদানী হলেও এবার হয়েছে মাত্র দুই থেকে আড়াইশ মন। নগরীর পোর্টরোডস্থ মৎস্য আড়তদাররা জানিয়েছেন বলছেন নিষেধাজ্ঞা মাত্র শেষ হয়েছে। দু’একদিন না গেলে ইলিশের আমদানী বোঝা যাবে না। তবে মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, গতবারের ন্যায় এবছরও ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে।
সরেজমিনে নগরীর পোর্টরোড মৎস্য আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে এখানে তেমন একটা ইলিশের আমদানী হয়নি। যা এসেছে তার মধ্যে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের তুলনায় ছোট সাইজের ইলিশ বেশি। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ২০০ থেকে আড়াইশ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে বরিশালের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২০০ থেকে ৭/৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশই বেশি। কোন কোন বাজারে জাটকা ইলিশও দেখা গেছে।
নদী থেকে ইলিশ মাছ নিয়ে আসা জেলে ইউসুফ মাল, আলমগীরসহ একাধিক জেলে জানান, সবেমাত্র নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে তেমন ইলিশ মিলছে না। অবশ্য কয়েকদিন না গেলে কি পরিমান ইলিশ ধরা পড়বে তা বলা যাচ্ছেনা। তারা আরো বলেন, সাগরের সাথে সংযুক্ত নদীর মোহনাগুলো এখন আর আগের মত নেই। অধিকাংশ স্থানে চর পড়ে সাগর থেকে ইলিশ আসার পথ রুদ্ধ হয়েছে। তাছাড়া অনেক অসাধু জেলে বেহুন্দি, কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার করায় ইলিশ মাছ গতিপথ পরিবর্তন করে সাগরে ফিরে যায়।
মৎস্য আড়ৎদার আনোয়ার হোসেন জানান, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে পোর্টরোডে ২শ’ থেকে আড়াইশ মন ইলিশ এসেছে। যা গত বছর নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পরদিন ছিল প্রায় ৩গুন বেশি। তিনি বলেন, গতবার নিষেধাজ্ঞার পরদিন প্রায় ৭শ’ মন ইলিশ বাজারে এসেছিল। তিনি জানিয়েছেন, এক কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি সাড়ে ৭শ’ টাকা এবং দেড় কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ১হাজার থেকে ১২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বরিশাল সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জিব সন্যামত বলেন, মিঠা পানিতে কাঙ্খিত ইলিশ পেতে জেলেদের আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে এ বছর নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রশাসন তৎপর থাকায় এবারও ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলেন এ কর্মকর্তা।