প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৫
ইসরায়েলের সামরিক ও পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে গোপন নথি প্রকাশ করেছে ইরান। মঙ্গলবার তেহরানভিত্তিক আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা মেহেরের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, এতে ইসরায়েলের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির বিস্তৃত বিবরণ, প্রশাসনিক কাঠামো এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের তথ্য রয়েছে।
ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রী ইসমাইল খাতিব জাতীয় টেলিভিশনে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের গোপন অস্ত্র কার্যক্রম এবং দীর্ঘদিন ধরে আড়ালে থাকা সামরিক প্রকল্পগুলোকে বিশ্বের সামনে আনা হয়েছে। প্রকাশিত নথিতে রয়েছে অতীতের বিভিন্ন অস্ত্র প্রকল্প, চলমান কার্যক্রম এবং পুরনো অস্ত্রের আপগ্রেড ও সংস্কারের রেকর্ড।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেল আবিব দীর্ঘ দশক ধরে তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা লুকিয়ে রাখতে সচেষ্ট ছিল। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এসব কার্যক্রম গোপন রেখেছিলেন, তবে এবার ইরান সেই গোপনীয়তার আচ্ছাদন সরিয়ে ফেলেছে।
ইরান দাবি করেছে, শুধু ইসরায়েলের ভেতরের প্রকল্পই নয়, যুক্তরাষ্ট্র এবং কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে তেল আবিবের সহযোগিতার প্রমাণও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে ইসরায়েলের উচ্চাকাঙ্ক্ষী অস্ত্র কর্মসূচির আন্তর্জাতিক মাত্রা স্পষ্ট হয়েছে।
খাতিব জানান, নথিতে তেল আবিবের পারমাণবিক সক্ষমতা বিকাশে জড়িত ১৮৯ জন সিনিয়র বিশেষজ্ঞকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ভূমিকা, সংযোগ এবং নির্দিষ্ট দায়িত্বগুলো বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এদের অনেকে জানতেও পারেননি যে তারা গোপনে ক্যামেরায় ধরা পড়েছেন।
প্রচারিত নথিতে বিশেষজ্ঞদের পরিচয়পত্র এবং ছবিও দেখানো হয়েছে। খাতিব বলেন, এটি কেবল একটি প্রাথমিক তালিকা, আরও তথ্য প্রকাশ করা হতে পারে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের অস্ত্র নীতি ও গোপন কার্যক্রম সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি মিলছে।
ইরানের এই পদক্ষেপকে তেহরান তাদের অভূতপূর্ব গোয়েন্দা অর্জন হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা বলছে, এ তথ্য বিশ্বকে জানাবে যে ইসরায়েল কীভাবে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে।
ঘটনাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এ প্রকাশনা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়াবে এবং ইরান-ইসরায়েল সম্পর্ক আরও সংকটাপন্ন করে তুলবে।