প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২০, ৫:৪৩
বরগুনার চা ল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১৪ কিশোর আসামির মধ্যে রয়েছে এ প্লাস প্রাপ্ত তিন মেধাবী মুখ। তিনজনই পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে গোল্ডেন জিপিএ-৫। এছাড়াও ক্রিকেট, হ্যান্ডবল, দৌঁড়, দাবা ও হকি খেলায় পারদর্শীতার সাফল্য রয়েছে এ কিশোরদের মধ্যে অনেকেরই। অভিযুক্তদের মধ্যে দু'জন সুযোগ পেয়েছে বরগুনা জেলা ক্রিকেট ও হকি দলের খেলোয়ার হিসেবে। বরগুনার একটি সচেতন মহল বলছেন, সন্তানের অবক্ষয়ের পেছনে শুধু পরিবারই নয়, বরং এ সমাজও দায়ী।
সামাজিক অবক্ষয়, রাজনৈতিক মেরুকরণ আর সর্বনাশা মাদকের ছোবলে অদম্য মেধাবী ও প্রতিভাবান এসব কিশোর আজ অন্ধকার জগতে ধাবিত হতে বাধ্য করা হচ্ছে। স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অহেতুকভাবে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। বাধ্য করা হয় রাজনৈতিক মিছিল, মিটিং এ অংশ নিতে। এমনকি শিক্ষকদেরো চাপে ফেলে এসকল কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করতে হুকুম জারি করা হয় উপর মহল থেকে। ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে এমন কচি মনের শিশুদের। যারা অজান্তেই জড়িয়ে যায় বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমায়।
রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় জড়িয়ে পড়া পুলিশের খাতায় রিশানের অপরাধের চিত্র উঠে এলেও; উঠে আসেনি একজন অদম্য মেধাবী রিশানের ঈর্ষণীয় ফলাফলের তথ্য। উঠে আসেনি পিএসসি, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় তার গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর। উপস্থিত বক্তৃতা, রচনা প্রতিযোগিতা ও বিতর্কে ছিলো এক অসাধারণ প্রতিভা।
মো. নাঈম এর বাবা সেন্টু চৌকিদার বলেন, আমরা অত্যন্ত গরিব পরিবার। রোজ আনি রোজ খাই। তবে না খেয়ে থাকাটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়ালেও, আমার তিন সন্তানদের জন্যই আয় করতে হয়। নাঈম প ম শ্রেণি থেকে শুরু করে এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত তার ফলাফল জিপিএ-৫। কিন্তু আজ এই রাজনৈতিক অপসংস্কারের কারণে সোনালী স্বপ্নগুলো মেঘে ঢেকে গেছে। এর দায়ভার কে নেবে?
এ বিষয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বরগুনার সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান বলেন, সামাজিক দায়িত্ব, রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রের দায়িত্বের মাধ্যমে এরকম মেধাবীদের আমরা গড়ে তুলতে পারছি না। পরিবারের যে দায়িত্ব পালন করার কথা, অনেক সময় সামাজিকভাবে তারাও সে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন। এর ফলে মেধাবীরা বিপথগামী হচ্ছে। এ দায় শুধু পরিবারের নয়; এ দায় সমাজের, রাষ্ট্রেরও।