প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৯
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে চলমান ইসরায়েলি হামলার তাণ্ডবে প্রাণ হারিয়েছে আরও অন্তত ৫০ ফিলিস্তিনি। বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়। এ নিয়ে গত প্রায় দুই বছরে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজার ৫৫ জনে।
সোমবার গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ৫০ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। একই সময়ে আহতের সংখ্যা ১৮৪ জনে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, আহত ও নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকা পড়েছেন এবং যথাযথ সরঞ্জাম ও মানবশক্তির অভাবে তাদের উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
দূর্যোগপূর্ণ এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের মানবিক চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ত্রাণ কার্যক্রমে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ৪৮ জন আহত হয়েছেন। এই সংখ্যা ২৭ মে থেকে ত্রাণ কার্যক্রম চলাকালীন প্রাণ হারানো ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২ হাজার ৫৭১ জনে পৌঁছিয়েছে। আহতের সংখ্যা অন্তত ১৮ হাজার ৮১৭ জন।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা এবং হামলায় নিহত ও আহতের সংখ্যা আন্তর্জাতিক নজর কেড়েছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।
এবং অবরুদ্ধ গাজার এই ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনের কারণে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের গণহত্যা মামলার মুখোমুখি হয়েছে। তবুও তাদের হামলা থামেনি। গাজায় এই বর্বরতা বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় তুলেছে।
সাম্প্রতিক হামলার ফলে গাজার হাসপাতাল ও চিকিৎসা সংস্থাগুলো চাপের মধ্যে রয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে এবং জরুরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়াও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশ্ব সম্প্রদায় বারবার ইসরায়েলের হামলা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছে, তবে বাস্তবে সহিংসতা থেমে নেই। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের পদক্ষেপে সামান্য হলেও সহায়তা পৌঁছে যাচ্ছে।
গাজার বর্তমান পরিস্থিতি মানবিক ও রাজনৈতিক উভয়ভাবেই অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করে জানাচ্ছেন, যদি অবস্থা এমনই থাকে, তবে আরও বৃহৎ মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে।
স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে শান্তি প্রক্রিয়ার ত্বরান্বিত বাস্তবায়ন জরুরি, যাতে ফিলিস্তিনিরা নিরাপদভাবে জীবনযাপন করতে পারে এবং মানবাধিকার রক্ষা পায়।