প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩২
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়, যার মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, মুখ্যসচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এতে রাজনৈতিক সংস্কার, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, জুলাই অভ্যুত্থানের দায়ীদের জবাবদিহিতা, বৈশ্বিক বাণিজ্যে সুরক্ষামূলক শুল্কনীতির প্রভাব এবং ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রস্তুতি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রধান উপদেষ্টা মহাসচিবকে জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে যে সংস্কারমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে, তার মূল লক্ষ্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা। তিনি উল্লেখ করেন, আগামী কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই সময়ে জাতিসংঘের সহায়তা অত্যন্ত প্রয়োজন।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও তাদের মিত্ররা পাচারকৃত সম্পদের মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের অনুকূল পরিস্থিতি চায় না এবং কিছু আন্তর্জাতিক মহলও তাদের সমর্থন দিচ্ছে।
জবাবে মহাসচিব গুতেরেস বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কার কর্মসূচিতে জাতিসংঘের জোরালো সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে জাতিসংঘের অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে।
গুতেরেস অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের এই কঠিন উত্তরণকালীন সময়ে তার নেতৃত্ব যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মাননীয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।
প্রধান উপদেষ্টা মহাসচিবকে আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি জানান, সম্মেলনটি রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের অগ্রাধিকার তালিকায় রাখবে এবং শরণার্থী শিবিরে জরুরি মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহে সহায়ক হবে।
বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই পুনর্ব্যক্ত করেন যে, শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কার ও রোহিঙ্গা সংকট সমাধান উভয় ক্ষেত্রেই জাতিসংঘের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।