জীবনবাজি রেখে করোনা মোকাবেলায় ইউএনও খালেদা খাতুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৈয়দ বশির আহম্মেদ, উপজেলা প্রতিনিধি কাউখালি (পিরোজপুর)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২১শে এপ্রিল ২০২০ ০৯:৫৯ অপরাহ্ন
জীবনবাজি রেখে করোনা মোকাবেলায় ইউএনও খালেদা খাতুন

পিরোজপুরের কাউখালীতে মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে শুরুর প্রথম থেকেই ঝুঁকি নিয়ে লড়ছে কাউখালীর উপজেলা নির্রাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখা। উপজেলাবাসীকে করোনা থেকে বাচাঁতে জনসাধারণকে নিরাপদে ঘরবন্দী রাখতে তিনি ব্যাপক চেষ্টা করে আসছে এবং তা স্বার্থকও হয়েছেন । ঘরবন্দী মানুষকে নিরাপদ রাখতে ইউএনওর গৃহিত বহুমূখী উদ্যোগ কাউখালী জনপদে করোনা মোকাবেলায় যথেষ্ট সুফল বয়ে নিয়ে আসছে। 

সরেজমিনে দেখাগেছে, উপজেলা নির্রাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখা নিরলসভাবে দিনরাত  বাজার গুলোতে লোক সমাগম না হয় তার জন্য বাজার গুলো বন্ধ করে তা নিবিঢ় পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন। জনসাধারণ বাড়ি বসে বসে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় করতে পারে ইউএনও’র উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথম কাউখালী উপজেলায় ভ্রাম্যমান বাজার চালু করে। এই উদ্যোগ নেয়ায় সারা দেশে আলোচনায় আসেন কাউখালীর ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা। বর্তমানে ৬০টি ভ্রাম্যমান বাজারে ভ্যানগাড়ী ও ২টি পিক আপ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার শহর ও গ্রাম গুলোর মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের নিত্যপ্রয়োজনী চাহিদা পূরন করে থাকে। এবং যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভ্রম্যামান বাজারের মালিকদের মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে, ফোন দিলেই বাড়ির সামনে চলে যায় প্রশাসনের ভ্রাম্যমান বাজার।  ভ্রাম্যমান বাজার গুলোত রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয়দ্রব্য, সবজি, মুরখী-মাছ, ডিম, ফল, কাপড় ইত্যাদি। এছাড়া ভাসমান বাজার, ভাসমান টহলের ব্যবস্থা করেন।

দেখা গেছে সেবার নৌকা নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সামগ্রী উপহার ঘরবন্দি মানুষের মাঝে বিতরণ করেন। করোনায় যখন জেলা প্রশাসক ও ডাক্তার এর মৃত্যুরও খবর শোনা যায় এবং ডাক্তার, সাংবাদিক ও পুলিশ  করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর শোনা যাওয়ার পরও একটু ভয় না পেয়ে কাউখালী উপজেলার মানুষকে করোনা থেকে বাচাঁতে জনসাধারণকে বাড়ী থাকার জন্য এবং শারীরীক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করছেন।  ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা নিজের জীবন বাজি রেখে দিন-রাত মানুষকে সচেতন করে যাচ্ছেন। এছাড়া ঘরবন্দি মানুষ যাদের বাড়ীতে খাবার নাই তারা ইউএনওকে ফোন দিলে তার বাড়ীতে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সামগ্রী উপহার  পৌছে যায় দুর্গত মানুষের বাড়ি। 

প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষের জন্য বই, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী, শুকনা খাবারসহ বিভিন্ন উপহারও দেন তিনি।  পাশা পাশি কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষদের খোজ খবরও রাখছেন। 

কাউখালীর ইউএনও বলেন, কাউখালীর মানুষ ঘরে থাকলে এবং শারীরীক দূরত্ব বজায় রাখলে আল্লাহর রহমতে কাউখালীবাসীও বাচঁবে আমিও বাচঁবো। মানুষকে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে যত ধরনের কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন তা গ্রহণ করে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সকলের প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত কাউখালীতে করোনা রোগী পাওয়া যায় নাই। সামনের দিনগুলোতে এভাবেই কাটুক কাউখালীর আগামী দিনগুলো। 

পিরোজপুর জেলা ৭টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। ইতি মধ্যে করোনা ভাইরাসে জেলায় ৫জন আক্রান্ত হয়েছে এবং ১জন মারা গেছে। পিরোজপুর জেলা লকডাউন ঘোষনা করেছেন জেলা প্রশাসক আবু আলী মোহামম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। কাউখালী থানা থানা পুলিশ ওসি মোঃ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ইউএনওকে ব্যাপক সহযোগীতা করে আসছেন এবং কাউখালীতে লকডাউন বাস্তবায়নে ব্যাপক কাজ করছেন। ইতিমধ্যেই উপজেলার দুইটি গুরুত্বপূর্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। একটি হলো খুলনা-বরিশাল মহা সড়কের শিয়ালকাঠী চৌরাস্তায় অপরটি হলো জয়কুলে। এছাড়া প্রতিনিয়ত কাউখালী থানা পুলিশ, সেনা বাহিনী, র‌্যাব এবং সাংবাদিকরা জনসচেতনা মূলকপ্রচার-প্রচারনা চালাচ্ছেন। 

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব