প্রকাশ: ৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩
মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় শক্তি হলো বিশ্বাসের স্থিরতা। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও নির্ভরতা রাখে, তার অন্তর কখনো ভেঙে পড়ে না। কুরআনে বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই মুমিনরা তারা, যারা আল্লাহর স্মরণে তাদের অন্তর প্রশান্ত হয়।” (সূরা রা’দ: ২৮)। এই প্রশান্তিই প্রকৃত সুখ, যা কোনো দুনিয়াবি বস্তু দিয়ে অর্জন করা সম্ভব নয়।
বিশ্বাস মানে শুধু মুখে বলা নয়, বরং হৃদয়ে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা যে, প্রতিটি বিষয়ই আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটে। তাই দুঃসময় আসলেও একজন মুমিন জানে, এটি তার ঈমানের পরীক্ষা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।” (তিরমিজি)।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যত চ্যালেঞ্জই আসুক, ঈমানের স্থিরতা সেই বাধাগুলোকে জয় করার শক্তি দেয়। অনেক সময় মানুষ আর্থিক সংকটে, রোগে বা পারিবারিক অশান্তিতে ভেঙে পড়ে। কিন্তু যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখে, সে জানে, প্রতিটি বিপদের পেছনে কল্যাণ লুকিয়ে আছে।
একজন প্রকৃত মুসলমানের জীবনের পথ কখনো সরল নয়। কখনো দুঃখ, কখনো সুখ—এই ওঠানামার মাঝেই বিশ্বাসের পরীক্ষা। কুরআনে আল্লাহ বলেন, “আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষতি, জীবন ও ফসলের মাধ্যমে।” (সূরা বাকারা: ১৫৫)। কিন্তু ধৈর্যশীলদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।
বিশ্বাসের শক্তি মানুষকে নৈতিক করে তোলে। কারণ যখন কেউ মনে করে, আল্লাহ সব দেখছেন, তখন সে অন্যায়ের পথে হাঁটে না। মিথ্যা, ঘুষ, দুর্নীতি—সবকিছুর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস আসে ঈমান থেকেই। সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মূল উৎস এই বিশ্বাসের শক্তি।
আজকের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অনেকেই দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে আধুনিকতার চাপে। কিন্তু যদি তারা কুরআন ও সুন্নাহর আলোয় নিজেদের জীবনকে গড়ে তোলে, তাহলে তারা শুধু নিজেদের নয়, সমাজকেও সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারবে।
বিশ্বাস মানে আত্মসমর্পণ। নিজের চিন্তা, ইচ্ছা ও সিদ্ধান্ত সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া। এর ফলেই আসে মানসিক শান্তি। প্রার্থনা, ইবাদত, ও নৈতিক জীবনযাপন—এই তিনটিই বিশ্বাসের ফলশ্রুতি।
তাই আজকের দিনে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন, ঈমানকে শুধু মুখে নয়, হৃদয়ে প্রতিষ্ঠা করা। বিশ্বাসকে জীবনের প্রতিটি কাজে বাস্তবায়ন করা। তাহলেই মুসলমানের জীবন হবে আলোকিত, স্থির, ও সফল—দুনিয়া ও আখিরাত দুই ক্ষেত্রেই।