এবছর সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে তবুও হাসিনেই কৃষকের মুখে। করন গত বছরের তুলনায় এবছর দাম অনেক কম। জেলার উৎপাদিত সুপারি দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হলেও স্থানিয় হাট বাজারে তেমন দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষক। জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন বাজারে বসেছে সুপারি বেচা কেনার হাট। সুপারি চাষে ঝুঁকছেন এখানকার কৃষকরা কারন সুপারি চাষে তেন খরচ নেই। প্রতিদিনই জেলা ও জেলার বাইরে থেকে বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন কৃষক এবং পাইকাররা। স্বল্প খরচ আর বিনা পরিচর্যায় উৎপাদিত এ সুপারি এবার ভালো দাম পাওয়া জাচ্ছেনা বলে স্থানীয় কৃষক গন জানান তার পরেও চলছে বেচা-কেনা। উৎপাদিত সুপারি জেলার চাহিদা মিটিয়ে বস্তা করে ট্রাকে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।এখানকার সুপাড়ি রংপুর ছৈয়দপুরে বেশি চালান করাহয়।
আড়ৎদাররা রপ্তানির জন্য মজুদ করছেন সুপারি। শ্রাবণ মাস থেকে শুরু হওয়া এ হাট চলবে অঘ্রহায়ন মাস পর্যন্ত বলে জানান শুপাড়ি ব্যবসায়ী মতিউর রহমান। স্থানীয় একজন সুপাড়ি চাষি বলেন,আমার বাড়িতে ৩/৪ শত গাছ আছে। প্রতি বছরই সুপারি বিক্রি করি কিন্তু এখন শুপাড়ি গাছ থেকে আহড়ন (পাড়ার) মানুষ পাওয়া যায়না যদি শুপারি আহড়ন (পাড়ার) মেশিন পাওয়া যেত তবে খুব ভাল হত। স্থানীয়রা জানান,শুপাড়ি গাছ থেকে পরিচর্যা ছাড়াই ৩০-৩৫ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। ২১০ টি (এককুড়ি) সুপারি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে যা গত বছরের তুলনায় অনেক কম গত বছর ২১০ টি (এক কুড়ি) শুপাড়ি ৪ শত থেকে ৫ শত টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হয়েছে। উপকূলীয় জেলাগুলোর মধ্যে পিরোজপুর সবচেয়ে বেশি সুপারির চাষ হয় বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ।
পিরোজপুরে এ বছরও সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে চলছে জমজমাট বেচাকেনা। তবে চাষীদের অভিযোগ, বিদেশি সুপারি আমদানি করায় দেশীয় সুপারির দাম কমে যাচ্ছে। তাই ফলন ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য বি ত হচ্ছেন তারা।দেশে সুপারির অন্যতম উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে দক্ষিণা লের সুপরিচিত জেলা পিরোজপুরে ইন্দুরকানী উপজেলা। এক সময় দেশে উৎপাদিত সুপারির বড় অংশ জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশী তালুকদার হাট ঘোষেরহাট, চন্ডিপুর বাজারে বেচা-কেনা চলে। ইন্দুরকানী বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ছোট বড় হাটে বেশি সুপারি কেনা-বেচা হয়।ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর এ মৌসুমে বিভিন্ন হাট থেকে সুপারি কিনে মজুদ করে রাখে। শুকিয়ে ও পানিতে ভিজিয়ে সুপারি সংরক্ষণ করা হয়।
পরে তা দেশের বিভিন্নস্থানে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। ফলন ভালো হলেও, ন্যায্য দাম পান না চাষীরা। তাই বিদেশি সুপারি আমদানি বন্ধ করে দেশীয় সুপারি বেশি বেশি রপ্তানি করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চাষীদের ক্ষতি পোষানের জন্য জেলা কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সমিতি গঠনসহ নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে,বলে জানালেন পিরোজপুর জেলা কৃষি অফিসার আবু হেনা মোঃ জাফর। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার উৎপাদন বেশি হবে বলে ধারণা কৃষি অফিসের। হাজার হাজার পরিবার বর্তমানে এ সুপারি চাষের ওপর র্নিভশীল। তারা অন্য চাষের চাইতে সুপারি চাষে কল্পনাতীত লাভবান হচ্ছেন বলে ইন্দুরকানী উপজেলা কৃষি অফিসার হুমায়রা সিদ্দিকা জানান।
চাষের উপযোগি আবহাওয়া হওয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও উৎপাদিত সুপারি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অ লে রপ্তানি করা হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরী সহযোগীতা পেলে গ্রামীণ কৃষকরা সুপারি চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদলে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে বলে স্থানিয়রা জানান। উন্নত জাতের সুপারি একবার চাষ করে সারা জীবন আয়ের মুখ দেখতে পায় কৃষকরা। এতে পরিবারে প্রচূর টাকা আয়ের মাধ্যমে জীবন জীবিকায় অবদান রাখে। সুপারি চাষীদের দেখাদেখিতে অন্য চাষে নিয়োজিত কৃষকগণও বর্তমানে এচাষের দিকে মনোযোগী হচ্ছে। কেননা এ গাছ একবার রোপন করলে প্রতি মৌসুমে ফল পাওয়া যায়।
এদিকে উপজেলা থেকে সপ্তাহের কয়েকটি হাটে ১২-১৫ ট্রাক সুপারি দেশের বিভিন্ন অ লে রপ্তানি করা হয়। এ উপজেলার সুপারি গুনে মানে উৎকৃষ্ট হওয়ায় বিভিন্ন অ লে এর বেশ কদর রয়েছে। ইন্দুরকানী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়রা সিদ্দিকা বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদেরকে উদ্ধুদ্ধ করে যাচ্ছি। যে কোনো চাষে কৃষকদের কারিগরি সহায়তার ও পরামর্শের জন্য আমাদের মাঠপর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ নিয়োজিত আছেন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।