অর্থশাস্ত্রে নিত্য পণ্য ও বিলাসী পণ্যের পার্থক্য, চাহিদা আর দামের সম্পর্ক নিয়ে অনেক কিছু বলা আছে। আবার গল্পে যে দেশে তেলের দাম আর ঘিয়ের দাম এক, সেই দেশে বসবাস না করার পরামর্শ দেওয়া আছে। দেশে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চেয়ে আপেলের দাম বেশি, এমনকি এক কেজি পেঁয়াজের দামে পাওয়া যায় দুই লিটারের বেশি অকটেন। পেঁয়াজের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ এক পরিবর্তন ঘটে গেছে। আগে পেঁয়াজ কাটলে তবেই চোখ থেকে পানি পড়ত, এখন দেখলেই পানি পড়ে। তবে এ জন্য অবশ্য বাজারে যেতে হবে। আসলে পেঁয়াজ নিজেই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্যে পরিণত হয়ে গেছে।
পেঁয়াজ নিয়ে যখন এত কথা তখন কৃষি প্রধান জেলা নওগাঁয় চলতি মওসুমে মোট ৩ হাজার ৫শ ২০ হেক্টর জমিতে পিঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে কৃষি বিভাগ। ধার্যকৃত লক্ষমাত্রা’র জমি থেকে ৩৪ হাজার ৮শ ৮৪ মেট্রিকটন পিঁয়াজ উৎপাদনের প্রত্যাশা করা হয়েছে। চারা রোপণকৃত হালি পেঁয়াজ এখন বিক্রি প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর গুঁটি থেকে উৎপাদিত মুড়িকাটা পেঁয়াজ বর্তমানে উঠতে শুরু করেছে। বেশি দাম পঁওয়ার আশায় অনেক চাষী তাদের ক্ষেত থেকে আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠাতে শুরু করেছেন। অনেক চাষী পেঁয়াজের পাশাপাশি পেঁয়াজ গাছের পাতা (সাঁই) বাজারে আনছেন। এর এক মোঠা নওগাঁর বাজরে বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
উপজেলাভিত্তিক পিঁয়াজ আবাদ এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে নওগাঁ সদর উপজেলায় ২শ ৯০ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন ২ হাজার ৮শ ৭৫ মেট্রিক টন, রানীনগর উপজেলায় ৮৫হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন ৮ষ ৪০ মেট্রিক টন, আত্রাই উপজেলায় ১শ ২৫ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন ১ হাজার ২শ ৪০ মেট্রিক টন, বদলগাছি উপজেলায় ৩শ ৯০ হেক্টর জমি সথেকে উৎপাদন ৩ হাজার ৮শ ৬৫ মেট্র্কি টন, মহাদেবপুর উপজেলায় ২শ ২০ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন ২ হাজার ১শ ৮০ মেট্রিক টন, পত্নীতলা উপজেলায় ১শ ৩৫ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন ১ হাজার ৩শ ৪০ মেট্রিক টন।
ধামইরহাট উপজেলায় ৭শ ২৫ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন ৭ হাজার ১শ ৮৫ মেট্রিক টন, সাপাহার উপজেলায় ৪শ ৪০ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন ৪ হাজার ৩শ ৬০৯ মেট্রিক টন, পোরশা উপজেলায় ৫৫ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন ৫শ ৪৪ মেট্রিক টন, মান্দা উপজেলায় ৮শ ৫০ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন ৮ হাজার ৪শ ২৫ মেট্রিক টন এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ২শ ৫ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩০ মেট্রিক টন পিঁয়াজ।
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মালশন গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এবার আমি দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। কিছু দিনের মধ্যে পেঁয়াজ ওঠানো শুরু করবো। আশা করছি গতবারের চেয়ে এবার দাম ভালো পাবো।
জেলার পোরশা উপজেলার কৃষক মো.লোকমান আলী জানান, ১বিঘা জমিতে পেঁয়াজ এর আবাদ করেছি। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে এবং দাম ভালো পাই তবে আগামী আরো বেশি আবাদ করবো। তবে প্রতিবারেই দাম কম পাওয়ায় এবারে অল্প জমিতে আবাদ করেছি।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন চলতি মওসুমে আলু উত্তোলনের পর সেসব জমিতে পিঁয়াজ চাষের প্রস্ততি গ্রহন করছেন কৃষকরা। আমরা আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হবে সেই ভালো দাম পাবেন বলে আমি করছি।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।