প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:৬
ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে মারার মামলার অভিযোগ গঠনের দিন আসামিরা এজলাস ও আদালত চত্বরে তার বড় ভাই মাহমুদুুল হাসান নোমানের দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পর তাঁরা দেখে নেবেন বলে হুমকিও দিয়েছিলেন। নোমান এই মামলার বাদী। গত বৃহস্পতিবার ফাঁসির রায় শোনার পর আদালতের ভেতরেই আসামিরা নুসরাতের মতো তার পরিবারের সবাইকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে পরিবারটি বিচলিত।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আশ্বস্ত করে বলেছেন, যত দিন দরকার নিরাপত্তা পাবে নুসরাতের পরিবার। গত বৃহস্পতিবার নুসরাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। মামলার ১৬ আসামির সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন তিনি।
আদালতের ভেতরে হত্যার হুমকি পাওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে জানিয়ে নোমান বলেন, ‘আমাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ আসামিদের ফাঁসির রায় হলেও তাদের লোকজন তো বাইরে আছে।’ তবে নোমান বলেন, ‘গত ১০ এপ্রিল থেকে আমাদের বাড়িতে সার্বক্ষণিক পুলিশের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। রায় ঘোষণার দিনে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো বাড়ানো হয়েছে। আমি ফেনীর পুলিশ সুপার সাহেবকে ধন্যবাদ জানাই যে তিনি সব সময় আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন।’ আসামিদের আইনজীবী আহসান কবির বেঙ্গল বলেন, ‘ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হয়তো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, আমি তাদের হুমকি দিতে দেখিনি।’ সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মঈন উদ্দিন আহামেদ বলেন, ‘আমরা নুসরাতের বাড়ির সকল সদস্যের নিরাপত্তার বিষয়টির গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন রেখেছি এবং মামলার রায় ঘোষণার আগের দিন থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো জোরদার করেছি। তার পরও আমরা নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়মিত কথা বলছি ও তাদের আশ্বস্ত করছি নিরাপত্তার বিষয়ে।’
সোনাগাজী উপজেলার মহেশ্চর গ্রামের মোশারফ হোসেন বলেন, ‘নুসরাত একজন প্রতিবাদী ছাত্রী ছিল। রায়ের মাধ্যমে নুসরাতের আত্মা শান্তি পাবে। আমরা এই রায়ে খুশি।’ সোনাগাজী বাজারের ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন বলেন, ‘এ রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো কেউ কোনো নারীর ওপর নির্যাতন করে পার পেতে পারে না। নুসরাত সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করত। আমরা খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর দেখতে চাই।’
ইনিউজ৭১/জিয়া