রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন

সংসদ অধিবেশন চলমান না থাকায় সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ জারি করেন। এতে নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে ধারা ১৭৩এ (Section 173A), যা ফৌজদারি মামলার তদন্ত চলাকালে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অব্যাহতি দেওয়ার আইনি সুযোগ তৈরি করেছে।

নতুন ধারা ১৭৩এ অনুযায়ী, তদন্ত চলাকালে পুলিশ কমিশনার, জেলা পুলিশ সুপার বা সমমর্যাদার কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিতে পারবেন। এতে মামলার অগ্রগতির তথ্য উপস্থাপন করা হবে। যদি দেখা যায় যে কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ অনুপস্থিত, তবে সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদন সাপেক্ষে আদালতে তা দাখিল করা যাবে। আদালত সন্তুষ্ট হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মামলাটি থেকে অব্যাহতি দিতে পারবেন।

তবে এটি চূড়ান্ত নয়। তদন্ত শেষে যদি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নতুন করে পর্যাপ্ত ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে ধারা ১৭৩ অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আবারও তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।

বিচার বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন এই ধারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় এক মানবিক ও কার্যকর সংযোজন। এটি একদিকে যেমন নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি ও অকারণে কারাবাসের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদি তদন্তাধীন মামলার চাপও কমাবে।

এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন ও বিচারপ্রাপ্তির পথে এক ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জিত হবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।