
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২:৪৪

বরিশাল নগরীর কাউনিয়া মরকখোলা পোল এলাকায় তেল ব্যবসায়ী রিয়াজুল হক সরদার হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ডিসি (নর্থ) মোকতার হোসেন’র দিক নির্দেশনায় এয়ারপোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রহমান মুকুলে ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রিয়াজ হত্যার দেড় মাসের মধ্যে হত্যাকান্ডে জড়িত দুইজনকে আটক করতে সক্ষম হন তারা। গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর পৃথক অভিযানে হত্যাকান্ডে জড়িত দুইজনকে আটক করেন তারা। আটককৃতরা হলো চাঁদপাশা ইউনিয়নের শ্রীমন্তরায় গ্রামের আঃ হাকিম চৌকিদারের ছেলে রুবেল চৌকিদার (২১) ও রহমতপুরের লোহালিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ লিমন (১৮)।
আটককৃতরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এবং বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মূলত মটর সাইকেল ছিনতাই ও অর্থলোভের কারণেই এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে ঘাতকরা বলে স্বীকারোক্তি দেন আটককৃতরা। আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় ডিসি (নর্থ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিসি (নর্থ) মোকতার হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট দিবাগত রাতে কোন এক সময় তেল ব্যবসায়ী রিয়াজকে হত্যা করে ছিনতাইকারীরা। ৬ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের একটি ডোবা থেকে রিয়াজুল হক সরদার (৩৭) নামের ওই ব্যবসায়ীর মৃতদেহ উদ্ধার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। এ ঘটনায় রিয়াজের স্ত্রী নাজমিন বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তেল ব্যবসায়ী রিয়াজ ঋণগ্রস্ত থাকায় ব্যবসার পাশাপাশি ভাড়ায় মটরসাইকেল চালাতেন।


সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনকারী ও তার স্ত্রীসহ আরো তিন ছিনতাইকারী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ আগস্ট রাত ২ টার দিকে মূল পরিকল্পনাকারীর স্ত্রী ও তার বন্ধু তেল ব্যবসায়ী রিয়াজকে ভাড়া চুক্তিতে বাবুগঞ্জের দিকে নিয়ে যায়। আটককৃত লিমন ও রুবেল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, এরপর বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের তালতলা এলাকার উঁচাপোল নামক স্থানে গিয়ে প্রথমে রিয়াজকে বেধে ফেলার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু তা না পেরে ছিনতাইকারী লিমন রিয়াজকে ধারালো দা দিয়ে কোপ দেয়। এসময় রিয়াজ তা ঠেকাতে গেলে তার হাতে কোপ লাগে। এরপর রিয়াজ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে ছিনতাইকারী দলের অপর ৪ জন তাকে ধরে ফেলে।
এ সময় রিয়াজের সাথে ছিনতাইকারীদের ধস্তাাধস্তি হওয়ার এক পর্যায় পাশের ডোবায় পড়ে যায় রিয়াজ ও একজন ছিনতাইকারী এবং সেখানেই শ্বাসরোধ হত্যা করা হয়েছে। তারা আরো জানিয়েছে, নিহত রিয়াজ ছিনতাইকারীদের চিনে ফেলায় ডোবার মধ্যে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরের দিন ৬ আগস্ট সকালে ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার হওয়ার পর ছিনতাইকারীরা আত্মগোপনে চলে যায় এবং ৭ আগস্ট আটককৃত লিমন ও মূল পরিকল্পনাকারী রিয়াজের মটর সাইকেলটি বরিশাল নগরীর ত্রিশ গোডাউন এলাকায় ফেলে রেখে যায়। হত্যাকান্ডের মিশনে মোট ৫ জন অংশ নিয়েছিল। অপর তিন ছিণতাইকারী এখনো পলাতক রয়েছে। তবে তাদের আটকে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন ডিসি মোকতার হোসেন। মামলার স্বার্থে অপর তিন ছিনতাইকারীর নাম প্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব