কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে প্লাটফর্ম ধরে সমাজের অসংগতি দূর করা সম্ভব। স্কুল ও মাদ্রাসায় আমাদের শিশু সন্তানদের সবচেয়ে নিরাপদ ভরসাস্থল। সেখানে ধর্ষণের মতো কোন ঘটনা কাম্য নয়। এগুলো সামাজিক অবক্ষয়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে। এজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিউনিটি পুলিশিং সভা ও উঠান বৈঠক করতে হবে। তাহলে আমাদের বরিশালে নতুন কোন “নয়ন বন্ড” তৈরী হতে পারবে না। গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার আয়োজনে ওপেন হাউজ ডে’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে একথাগুলো বলেন বিএমপি কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার)।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে ওপেন হাউজে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে গত মাসের ওপেন হাউজ-ডে অনুষ্ঠানে বিএমপি কমিশনারের দেয়া নির্দেশনার অগ্রগতি তুলে ধরেন থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তানজিল আহম্মেদ। কাউনিয়া থানা চত্ত¡রে আয়োজিত ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে কাউনিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ জাহাঙ্গীর মল্লিক, সহকারী কমিশনার আঃ হালিম, সহকারী কমিশনার (স্টাফ অফিসার) শাহেদ আহম্মেদ চৌধুরী, কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার ইন্সপেক্টর আতাউর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সাইদুর রহমান রিন্টু।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চরবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহাতাব হোসেন সুরুজ, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যরা, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ থানার সকল সদস্যবৃন্দ। সভায় অংশগ্রহণকারীরা ইভটিজিং, মাদক, সন্ত্রাসীসহ রেনুপোনা পাচারকারী ও আবাসিক হোটেলগুলোতে অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয় নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
বিএমপি কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাদের প্রতিটি প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব দেন। তিনি বলেন, বাল্য বিবাহ ও ধর্ষণ এখন সামাজিক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়েছে। তাছাড়া মাদক সহনীয় পর্যায়ে আসলেও নির্মূল হয়নি। এটা সমাজ থেকে নির্মূল করতে হবে। আর এটা করতে হলে শুধুমাত্র পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের উপর নির্ভর করলে হবেনা। শিক্ষক, ইমাম, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
সভায় অংশগ্রহণকারীদের আলোচনার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। কিন্তু এ কার্যক্রম বেগবান করতে হবে। নামমাত্র কমিটি থাকলে তাতে কোন কাজ হবে না। এজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিউনিটি পুলিশিং এর সক্রিয় কমিটি গঠন করতে হবে। যেখানে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের প্রাণ থাকবে। এ সময় তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতি মাসে কমপক্ষে একটি কমিউনিটি পুলিশিং সভা ও উঠান বৈঠক করার জন্য নির্দেশনা দেন।
অপর এক অংশগ্রহণকারীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সুনির্দ্দিষ্ট তথ্য ও প্রমান ছাড়া কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা যাবে না। সভায় অংশ নেয়া অপর এক অংশগ্রহণকারীর বক্তব্যে বিএমপি কমিশনার আরো বলেন, মাদক সম্পর্কে আমাদের তথ্য দিলে যারা আপনাদের মাদক দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার কথা বলছে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে প্রমান সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হয়। যাচাই বাছাই ও সঠিক প্রমান ব্যতীত কাউকে অহেতুক হয়রাণী করবে না পুলিশ। তিনি আরো বলেন, ইভটিজিং, মাদক, সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও জঙ্গি নির্মূল সহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে একটি কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আর তা হলো প্রতি তিন মাস অন্তর আমাদের অফিসারগণ বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা পরিদর্শন করবেন এবং সামাজিক অবক্ষয়ের উপর সচেতনতামূলক কর্মশালা করবেন। এজন্য সকলের সহায়তা কামনা করেন পুলিশ কমিশনার শাহবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার)।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।