একই মডেলের গাড়ি, নম্বর প্লেটও হুবহু এক। রাজধানীর একটি সড়কে পাশাপাশি দুটি গাড়ির ছবি ফেসবুকে আপ করার পর থেকে তোলপাড়। এটা কীভাবে সম্ভব-সে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।এটি সত্যিকার ছবি নাকি কারসাজি করা, এমন কথাও উঠেছে। তবে বিআরটিএও মনে করছে, ছবিটি ভুয়া না। গাড়ি দুটির খোঁজে নেমেছে পুলিশ। অনুসন্ধানে শুল্ক গোয়েন্দারাও। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএও।পুলিশ বলছে, একই মডেল ও একই রঙের গাড়ি দুটি হতেই পারে। কিন্তু নম্বরপ্লেট এক হওয়ার আইনত কোনো সুযোগ থাকার কথা না। এটি যদি হয়ে থাকে তাহলে বিআরটিএর নিবন্ধন প্রক্রিয়াতেই ঘাপলা থাকতে পারে। হয়ত এভাবে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। আবার গাড়ির মালিকদের জন্যও এটি একটি সতর্কবার্তা। হয়ত একই নম্বরপ্লেটের দুটি গাড়ির একটি ব্যবহার হচ্ছে অবৈধ কোনো কাজে। তার তাতে ফেঁসে যেতে পারেন নিরপরাধ অপরজন।
টয়োটার এই মডেলের কারের ছবিটা আরেকটা গাড়ির পেছন থেকে তোলা হয়েছে। ছবিতে গাড়ি দুটির নম্বর প্লেটেই লেখা আছে ঢাকা মেট্রো-গ ৪২-৪৬১৮।রুহুল আমিন রিপন নামে একজন ছবিটা পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ছবিটা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। আমিও বিভ্রান্ত হই। কিন্তু অরিজিনাল হিসেবে বিশ্বাস করি। কারণ ছবিটা প্রথম ফেসবুক শেয়ার করেন বাম মতাদর্শের একজন এক্টিভিস্ট। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ছবিটার বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ওনার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। কিন্তু উনি কোন সাড়া দেননি। তবে কমেন্টে উনি দাবি করেছেন, ছবিটা অরিজিনাল।‘বিষয়টা নিয়ে আমি এরই মধ্যে শুল্ক গোয়েন্দার সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও অনুসন্ধানে নেমেছে। তবে ওই বাম ফেসবুক এক্টিভিস্ট ভদ্রলোক গোয়েন্দাদের ও সহযোগিতা করেননি। আশা করছি শিগগিরই সমাধান আসবে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা গাড়ির নম্বর যাচাই করে জানিয়েছে, এই গাড়িটি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ঋণে কেনা হয়েছে। মালিকানায় আসওয়াত কম্পোজিট মিলস নামে একটি পোশাক কারখানা।বিআরটিএর একজন সহকারী পরিচালক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘হয় ছবিটি ভুয়া, নয় মালিকপক্ষ একই নম্বরে দুটি গাড়ি চালায়।’ওই কর্মকর্তা জানান, গত ৩ মার্চ গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। এখনো ডিজিটাল নম্বর প্লেট নেয়নি মালিকপক্ষ। এ কারণে আরেকটি নম্বরপ্লেট বানিয়ে অন্য একটি গাড়িতে লাগানো সম্ভব। এই বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে গাড়ির মালিককে ডাকা হয়েছে।ঢাকা মহানগর পুলিশের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘একই নম্বরে দুটো গাড়ি কখন হয় না। তবে অন্য কিছুর আশ্রয় নিয়ে গাড়ি দুটি চালানো হয়ে থাকতে পারে। তবে এটার কোন কারণ আছে। পুলিশ গাড়ির কাগজ পরীক্ষার সময় কমই ইঞ্জিনের সঙ্গে কাগজ মিলিয়ে দেখে। বাজ্যিকভাবে একই হলেও ইঞ্জিন নম্বর তো আলাদা করার সুযোগ নেই। তাই একই নম্বর প্লেটে দুটি গাড়ি পৃথক জায়গায় চললেও সেটা ধরার সম্ভব সব সময় হয় না।’
জানতে চাইলে ডিএমপির মহাখালী অঞ্চলের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আশরাফউল্লাহ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গাড়ির নম্বর প্লেটের নম্বর এক হতে পারে। তবে সিরিজ আলাদা হয়। যেমন গ, ঘ এর পার্থক্য থাকতে পারে। অনেক সময় সিরিজের ভুল থাকে। কিন্তু এই নম্বর প্লেটে ‘গাড়ির নম্বর এবং সিরিজ একই। তাই এখানে কোন গলদ থাকতে পারে।’বিআরটিএর সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডিজিটাল নেমপ্লেট আমরা দেইনি। এটা কাগজ প্রিন্ট করে লাগিয়ে নেওয়া হয়েছে। হয়ত ভেবেছে কাগজ নেই, রেজিস্ট্রেশন নেই, ফাঁকি দিয়ে কিছুদিন চালানো যাবে। যাদের আমরা রেজিস্ট্রেশন দিয়েছি তাদের কল করেছি।’গাড়ির ছবি আমাদের কাছে ভুয়া মনে হয়নি। একই মডেলের গাড়ি হওয়ায় হয়ত একটা করেছে আরেকটা করেনি। যেহেতু হাতে লেখা নম্বর প্লেট। এরাই দুষ্টুলোক। অঘোষিত সুবিধা নেয়ার জন্য এটা করতে পারে।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।