প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২২:৪৬
অগ্নিকাণ্ডের আতঙ্ক কাটিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চিকিৎসা নিতে হাসপাতালটিতে ফিরে আসছেন পুরাতন (ভর্তি থাকা) রোগীরা। সেই সঙ্গে জরুরি বিভাগে নতুন রোগীরাও চিকিৎসা নিতে আসছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আগুন লাগার পর রাত ১০টার পরপরই হাসপাতালটিতে সীমিত পরিসরে চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়। তবে শুক্রবার সকাল থেকে পুরোপুরি চিকিৎসা সেবা শুরু হয়েছে হাসপাতালটিতে।আগুন লাগার পর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে ১ হাজার ১৭৮ জন রোগী অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। এসব রোগীর মধ্যে ৭১৮ জন আজ দুপুর আড়াইটার মধ্যে হাসপাতালে ফিরে এসেছেন। পাশাপাশি নতুন চিকিৎসা সেবা নিতে নতুন ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখা যায়, হাসপাতালটির গেটের পাশেই চেয়ার-টেবিল পেতে ডেক্স বসানো হয়েছে। সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন একাধিক চিকিৎসক ও নার্স। এখান থেকেই পুরাতন রোগীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করে চিকিৎসার জন্য ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
এখানেই কথা হয় মো. আব্দুস শহিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার মা জেলেহা খাতুন (৮০) ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। আগুন লাগার পর আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমার মাকে কারা ওয়ার্ড থেকে বের করেছেন তা-ও জানিনা। এক-দেড় ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর হাসপাতালের মাঠে মাকে পাই। এরপর এখান থেকে আমাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে কোনো বেড পাইনি। আমার মা সার্জারি রোগী, তাই হাসপাতালের বারান্দায় না রেখে আমার মোহাম্মদপুর কাটাসুরের বাসায় নিয়ে যায়। বাসা থেকে আজ সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসলে মাকে অন্য একটি ওয়ার্ডে দিয়ে দিয়েছে।’
জরুরি বিভাগের গেট দিয়ে প্রবেশ করেই হাতের ডানে একটি রুমের বারান্দায় এক বৃদ্ধ রোগীকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন এক নারী। কথা হয় ওই নারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রোগী আমার স্বামী মফিজুল রহমান। স্ট্রোক করায় দুইদিন আগে উনি এখানে ভর্তি হয়েছেন। প্রথম থেকেই এই স্থানটিতে ওনাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গতকাল আগুন লাগার পর আমরা গাজিপুরের বাসায় চলে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আজ আবার ফিরে এসেছি।’
বৃহস্পতিবারই আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ ছাড়া হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম কুমারকে প্রধান করে সাত সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করা এক নারী চিকিৎসক বলেন, ‘নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থেকে যে সব রোগী সরিয়ে নেয়া হয়েছিল তাদের আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পাশাপাশি অন্য রোগীরাও আসছেন। এদের সঙ্গে নতুন রোগীও ভর্তি হচ্ছেন। তবে শুক্রবার হওয়ায় আজ বহির্বিভাগের সেবা বন্ধ। আগামীকাল থেকে জরুরি বিভাগের পাশাপাশি বহির্বিভাগেও চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে।’
ইনিউজ ৭১/এম.আর