প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:২৭
বাংলাদেশকে তিনটি বড় প্রকল্পে ঋণ ও অনুদান হিসেবে ২৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং এ সম্পর্কিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি অনুযায়ী, খুলনা শহরে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা উন্নয়নে ১৫ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি। এছাড়া প্রকল্পটির আওতায় ৪ মিলিয়ন ডলার অনুদানও দেওয়া হবে। এই অর্থ দিয়ে খুলনা শহরের সুবিধাবঞ্চিত বাসিন্দাদের জন্য পানি সরবরাহ পরিষেবা সম্প্রসারণ করা হবে এবং শুষ্ক মৌসুমে টেকসই পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, প্রকল্পটি জলবায়ু-সহনশীল ও টেকসই সমাধানের মাধ্যমে খুলনা শহরের ভূ-পৃষ্ঠের পানির রূপান্তরকে এগিয়ে নেবে। এটি ১৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন মানুষকে নির্ভরযোগ্য পানি সরবরাহ করবে, বিদ্যমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন করবে এবং ২০৫০ সাল পর্যন্ত পানি চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
প্রকল্পে স্মার্ট পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা গ্রহণ, তত্ত্বাবধান নিয়ন্ত্রণ এবং ডেটা অর্জন সিস্টেমের সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির লবণাক্ততা মোকাবিলায় জলবায়ু-সহনশীল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান আনা হবে।
এছাড়া বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ নেটওয়ার্কের মান, দক্ষতা ও নির্ভরযোগ্যতা উন্নয়নে ৯ দশমিক ১ কোটি ডলার দেবে এডিবি। এই প্রকল্পে উন্নত স্মার্ট প্রযুক্তির একীভূতকরণের মাধ্যমে টেকসই ও ডিজিটাল রূপান্তর ঘটানো হবে।
বিদ্যুৎ বিতরণ নেটওয়ার্ক উন্নয়নের ফলে উত্তরাঞ্চলের মানুষের উপকার হবে এবং জলবায়ু-সহনশীল অবকাঠামো শক্তিশালী হবে। একইসঙ্গে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে সৌর ব্যাকআপ সিস্টেম স্থাপন করে দুর্যোগ প্রস্তুতি বাড়ানো হবে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিদ্যুৎ-ভিত্তিক জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
নতুন চুক্তি অনুযায়ী, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সম্প্রদায় ও স্থানীয়দের সহায়তায় ৫ কোটি ৮৬ লাখ ডলার অনুদান দেবে এডিবি। এই অর্থ দিয়ে ক্যাম্পের বাসিন্দা ও স্থানীয়দের সামাজিক সংহতি বৃদ্ধির পাশাপাশি জীবিকা উন্নয়নে কাজ করা হবে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের স্থিতিশীলতা ও জীবিকার সুযোগ জোরদার করতে এই সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। এটি পূর্ববর্তী জরুরি সহায়তা প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় অতিরিক্ত অর্থায়ন হিসেবে ব্যবহার হবে। ২০১৮ সাল থেকে এই খাতে এডিবির সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।