বাংলাদেশের বিল পরিশোধে সন্তুষ্ট আদানি পাওয়ার,বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ছে !

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ারের কাছে যে বিপুল অঙ্কের বকেয়া ছিল, তা ধীরে ধীরে পরিশোধে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়া এই আর্থিক বোঝা সামাল দিতে এখন প্রতি মাসে বিলের পাশাপাশি পুরোনো বকেয়াও মেটানো হচ্ছে। শুক্রবার আদানি পাওয়ারের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা দিলিপ ঝা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

দিলিপ ঝা বলেন, বাংলাদেশের কাছ থেকে তারা এখন যে অর্থ পাচ্ছেন তা শুধুমাত্র মাসিক বিল নয়, বরং পুরোনো বকেয়া পরিশোধও শুরু হয়েছে। বর্তমানে আদানির পাওনা রয়েছে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার, যদিও ইতোমধ্যে প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ পরিশোধ করেছে। তিনি আশাবাদী যে সম্পূর্ণ অর্থ আদানির হাতে আসবে শিগগিরই।

২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার ও আদানি পাওয়ারের মধ্যে একটি বড় আকারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরপর ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যাপক চাপে পড়ে। জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়া এবং শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কারণে বকেয়া বিল সময়মতো পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।

এরই প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে কমিয়ে দেয়। এতে করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা দেখা দেয় এবং জনভোগান্তি বাড়ে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এবং অর্থ পরিশোধ ফের শুরু হওয়ায় আদানি আবারও পুরো মাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করেছে।

দিলিপ ঝা জানান, বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে বিশ্লেষকদের তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎ পাচ্ছে এবং অর্থপ্রাপ্তির দিক থেকে আদানি এখন বেশ সন্তুষ্ট। মাসিক বিলের তুলনায় বেশি অর্থ আদানি এখন পাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

আদানির তরফ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে তাদের মোট বিল ২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ১.২ বিলিয়ন ইতোমধ্যে পরিশোধ হয়েছে, বাকিটুকু পাওয়া নিয়ে তারা আশাবাদী।

এই অর্থনৈতিক জটিলতা মিটে যাওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক নতুনভাবে শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।