বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার (২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে এবি পার্টির পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, “আমি আবারও স্পষ্টভাবে বলতে চাই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখনই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আদালতের মুখোমুখি করতে হলে এই উদ্যোগ অবিলম্বে গ্রহণ করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটের মাধ্যমে গঠিত সংসদ ও সরকারই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
তারেক রহমান বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর আবির্ভাবকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, “গত এক দশকে অন্তত ২৫টি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে সব গণতান্ত্রিক দলের অবস্থান অভিন্ন হওয়া উচিত।”
তিনি অভিযোগ করেন, যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছিল, তারা আজ দেশ থেকে পলায়ন করেছে। সেই সঙ্গে বলেন, গণতন্ত্রকামী জনগণ কখনোই দেশবিরোধী অপশক্তিকে গ্রহণ করবে না।
সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তারেক রহমান প্রশ্ন রাখেন, “যারা তিনবার জনগণের ভোট ছাড়া অবৈধভাবে সরকার গঠন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে?” তিনি সতর্ক করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতের জনগণের সরকার সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে তারেক রহমান বলেন, “স্বৈরাচারের দোসররা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে পুনর্বাসিত হওয়ার অপচেষ্টা করছে। যারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলছেন, তারা হয়ত বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করেননি।”
তারেক রহমান মনে করেন, রাষ্ট্রে টেকসই সংস্কার আনতে হলে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের সরাসরি ভোটে গঠিত সরকার ছাড়া স্থায়ী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “আজ এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে নির্বাচনের দাবি করাও অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি একটি অশুভ সংকেত।”
অবশেষে তিনি বলেন, প্রতিটি দল সংস্কারের পক্ষে থাকলেও সরকার যেভাবে সময়ক্ষেপণ করছে, তাতে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন বাড়ছে। সংস্কার তখনই অর্থবহ হবে, যখন রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের দাবি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।