বিডিআর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কার্যক্রম পুরোদমে এগিয়ে চলছে এবং কমিশন আশা করছে আগামী জুনের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব হবে। বুধবার বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ তথ্য জানান তদন্ত কমিশনের সদস্যরা। প্রেস উইং থেকে জানানো বিবৃতিতে তদন্তের অগ্রগতির নানা দিক উঠে আসে।
কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আলম ফজলুর রহমান বলেন, ২০০৯ সালের এই নারকীয় ঘটনার তদন্ত দীর্ঘসূত্রিতার শিকার হলেও শেষপর্যন্ত আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাই। তিনি জানান, অনেক অভিযুক্ত ব্যক্তি বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, যার ফলে তথ্য সংগ্রহে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
আলম ফজলুর রহমান জানান, ২৩ জন বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির মধ্যে ৮ জন ইতোমধ্যে সাক্ষাৎ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কারাগারে থাকা কয়েকজনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত কাজ আরও গভীরভাবে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে বোঝা যাচ্ছে, এটি ছিল অত্যন্ত পরিকল্পিত। প্রথমে ডিজিকে হত্যা করা হয়, এরপর অন্যান্য অফিসারদের হত্যা করা হয়। এমন ঘটনা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে না, এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র কাজ করেছে।
এই ঘটনার তুলনা তিনি পলাশীর যুদ্ধের সঙ্গে করে বলেন, এর শেকড় কোথায় সেটা বের করতেই হবে। কমিশনের আরেক সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, এতো বড় জঘন্য হত্যাকাণ্ডের পরও কেউ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পায়নি, যা গোয়েন্দা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার পরিচয় বহন করে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, তারা নিজেদের অফিসারদেরই ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে। পুরো জাতি আজও সেই ঘটনার স্পষ্ট জবাব খুঁজছে এবং কমিশনের দিকেই সবার চোখ।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন তদন্ত কমিশনের সদস্যবৃন্দ, যারা জানান, সব তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে নিরপেক্ষ ও সুস্পষ্ট প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে।