বাংলাদেশের ২০২৫ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের জরিপে বিএনপি সর্বোচ্চ ৪১.৭ শতাংশ ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা দেখানো হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংস্থা ইনোভিশন কনসাল্টিং বাংলাদেশের করা এই জরিপটি শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে প্রকাশিত হয়েছে। জরিপটি পরিচালনা করা হয়েছে ব্রেন (BRAIN) এবং ‘ভয়েস ফর রিফর্ম’ প্ল্যাটফর্মের সহযোগিতায়।
জরিপটি ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশের আটটি বিভাগের ৬৪টি জেলার ১০ হাজার ৬৯৬ জনের উপর পরিচালিত হয়। এতে দেখা যায়, বিএনপি ৪১.৭ শতাংশ ভোট পেতে পারে, যা বর্তমান নির্বাচনী পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে, ৩১.৬ শতাংশ ভোট পেতে পারে, এবং আওয়ামী লীগ ১৩.৯ শতাংশ ভোট পেতে পারে। নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ৫.১ শতাংশ ভোট পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২.৬ শতাংশ, জাতীয় পার্টি ১ শতাংশ, গণঅধিকার পরিষদ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ, গণসংগতি আন্দোলন শূন্য দশমিক ২ শতাংশ এবং অন্যান্য দলগুলো ৩.৩ শতাংশ ভোট পাবে বলে জরিপের ফলাফল উঠে এসেছে।
ভোটারদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, জেনারেশন এক্স ও বুমার প্রজন্মের ৪৭ শতাংশ ভোটার বিএনপিকে সমর্থন করছেন। জামায়াতে ইসলামী ৩৫ শতাংশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে যুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে। দলের মধ্যে তরুণদের মধ্যে এমন জনপ্রিয়তা অর্জনের ফলে জামায়াতের রাজনৈতিক প্রভাবের দৃশ্যমান বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে।
গ্রাম ও শহরের ভোটারদের মধ্যে বিএনপি গ্রামাঞ্চলে ৪২ শতাংশ এবং শহরে ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে, যা খুবই স্থিতিশীল। অন্যদিকে, জামায়াতের সমর্থন গ্রামে ৩২ শতাংশ এবং শহরে ৩০ শতাংশ। লিঙ্গভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিএনপির পুরুষ ও নারী ভোটারের মধ্যে সমর্থন প্রায় সমান, যেখানে পুরুষদের মধ্যে ৪২ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৪১ শতাংশ সমর্থন রয়েছে।
এই জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজনের পক্ষে ৫৮ দশমিক ১৭ শতাংশ ভোটার মতামত দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটার জুনের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে এবং ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ ডিসেম্বরে নির্বাচন চাচ্ছেন।
রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে জরিপে অংশগ্রহণকারী ৯ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন এবং ৫ দশমিক ৩ শতাংশ সংবিধান পরিবর্তনের পক্ষে মত দিয়েছেন। এছাড়া, প্রায় ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ ভোটার এখনো তাদের ভোটের সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তাদের মধ্যে অনেকেই প্রার্থী সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহের পর সিদ্ধান্ত নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইনোভিশন কনসালটিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবাইয়াৎ সারওয়ার জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইনোভিশন কনসালটিং বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী শাহেদ এইচ ফেরদৌস এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।